দেবহাটা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ আছাদুল হকের নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কুটুক্তির মিথ্যা অপবাদ দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় দেবহাটার কুলিয়া শহীদ মিনার এলাকায় সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ মহাসড়কের পাশে মানববন্ধন কর্মসূচীটি পালিত হয়।
আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আছাদুল হককে জনবিচ্ছিন্ন ও কোনঠাঁষা করে নির্বাচনী স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রতিদ্বন্দী নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আসাদুল ইসলাম ষড়যন্ত্র মুলোক ভাবে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কুটুক্তির মতো জঘন্য মিথ্যা অপবাদ আছাদুল হকের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন বলে মানববন্ধনে উল্লেখ করেন বক্তারা।
মানববন্ধনটিতে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ বারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও আসন্ন নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আছাদুল হক ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য রওনাক-উল-ইসলাম রিপন, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা দুলাল চন্দ্র সরকার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মৃনাল মন্ডল, উজ্জ্বল দাশ, আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল শেখ, কুতুব লষ্কর, আসাদুজ্জামান টুকু, হারিজ শেখ প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আসাদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে যেসব অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন সেগুলোকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন আছাদুল হক। মানববন্ধনে আছাদুল হকের বক্তৃতা চলাকালে দেবহাটা থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মানববন্ধনটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে নিজের কার্যালয়ে ফিরে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা বলেন আছাদুল হক।
এসময় আছাদুল হক বলেন, আমি দীর্ঘদিন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছি এবং টানা প্রায় ২৮ বছর কুলিয়া ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে মানুষের কল্যানে কাজ করেছি। আগামী ২৮ নভেম্বর আসন্ন কুলিয়া ইউপি নির্বাচনের জন্যও আমি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। ২২ অক্টোবর দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে ২৪ অক্টোবর আমি আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের কাছে মনোনয়নপত্র পুনঃ বিবেচনার জন্য আপীল করে ২৮ নভেম্বর ঢাকা থেকে এলাকায় ফিরে আসি।
২৭ নভেম্বর ঢাকায় বসে আমি দেখতে পাই যে, নৌকার প্রার্থী আসাদুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে কুটুক্তি, তার নির্বাচনী কার্যক্রমে বাঁধাসৃষ্টি, দলীয় নেতাকর্মীদের ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অভিযোগ তুলে আমার বিরুদ্ধে দেবহাটা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। যার প্রেক্ষিতে আমি ঢাকাতেই একটি অনলাইন স্বাক্ষাতকারে আমার অবস্থান তুলে ধরি।
আমাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করায় ওই স্বাক্ষাতকারে আমার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করি। কিন্তু আমি কোথাও আমার নেত্রীকে নিয়ে কোন মন্তব্য করিনি। ২৮ অক্টোবর একদিনের জন্য এলাকায় এসে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করতে গিয়েও পুলিশি বাঁধার সম্মূখীন হয়ে মনোনয়ন বোর্ডের আপীল শুনানীর কাজে ঢাকায় চয়ে যাই। সেখানে অবস্থানকালে দেখতে পাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদুল ইসলাম আবারো কুলিয়াতে মানববন্ধন করে আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরছেন।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে আছাদুল হক বলেন, সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনো আমি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি। অথচ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার নেত্রী সম্পর্কে অসম্মান জনক মন্তব্য করার মিথ্যা দায় আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে মনোনয়ন প্রাপ্ত নৌকার প্রার্থী আসাদুল ইসলাম।
আমি যখন ঢাকায় অবস্থান করছি এবং আমি নির্বাচনী সভা সমাবেশ করতে মাঠে নামিনি, তাহলে আমি কখন, কোথায় এসব অপরাধ করলাম; যেগুলোর মিথ্যা দায় আমার ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে?- দলীয় নেতাকর্মী, সাধারণ ভোটাও ও প্রশাসনের কাছে এমন প্রশ্নও রাখেন আছাদুল হক।
কেবলমাত্র প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী হওয়ায় তাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরাতে এবং প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলে নির্বাচনী স্বার্থ হাসিলের জন্য আ.লীগের প্রার্থী আসাদুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে এধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন আছাদুল হক।
একজন প্রার্থী হিসেবে বাঁধাহীনভাবে নিজের নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা এবং আগামী ২৮ নভেম্বর সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সহযোগীতাও কামনা করেন বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আছাদুল হক।