স্টাফ রিপোর্টার : সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দুইটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল লুটপাট ও দোকানঘর জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ জুন) ভোররাতে বড় বাজারের মুদি মার্কেটে এঘটনা ঘটে।
বড় বাজারের নৈশ প্রহরীদের সহায়তায় ওই মালামাল লুটপাট করে ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেন মুদি মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মুকুল হোসেন, রুপায়ন স্টোরের সত্ত্বাধিকারী হাফিজ হোসেনসহ অনেকে। এঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠান দুইটির সত্ত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান মোজাম্মেল।
জানা যায়, বিগত ১২/১৩ বছর পূর্বে বড় বাজার জামে মসজিদের জায়গায় সরকারি পেরীফেরির জায়গা হওয়ার কারনে কোনপ্রকার চুক্তিপত্র ছাড়ায় মসজিদের সিঁড়ির নিচে অবস্থিত দুইটি দোকান ঘর মসজিদ কমিটির থেকে ডিট নেন মোজাম্মেল। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী পুনরায় ওই দোকান দুইটি একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ডিট নেন তিনি। ওইসময় জামাতন বাবদ দেড় লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ডিটের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দোকান ঘরের ভাড়া না দেওয়ার শর্তে মোজ্জামেলের থেকে তিন লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন মসজিদ কমিটির সাধারণ-সম্পাদক আব্দুর গফুর। সেই থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে ব্যবসা করলেও সম্প্রতি কয়েক মাস আগে মোজ্জামেলের ডিটকৃত জায়গার উপরে নজর পড়ে বড় বাজার মুদি মার্কেটের সাধারণ-সম্পাদক মুকুল হোসেনের।
ওইসময় মুকুল হোসেন মসজিদ কমিটির লোকজনদের ম্যানেজ করে মোজ্জামেলের কাছে ভাড়া দাবি করেন। তবে ভাড়া নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় ওই সময় আদালতে একটি মামলা করেন মোজ্জামেল। পরবর্তী আদালত ওই জমিতে ১৪৫ ধারা জারি করে রায় না দেওয়া পর্যন্ত যে যেভাবে দখলে রয়েছে তাকে সেভাবে থাকার আদেশ দেন।
তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শুক্রবার ভোররাতে বড় বাজারের নৈশ প্রহরীদের সহযোগীতায় মুকুল হোসেন, আব্দুল গফুর, হাফিজ হোসেন, রমজান আলী, আনার হোসেন, খালিদ হোসেনসহ অজ্ঞাত কয়েকজন ব্যক্তি মোজাম্মেলের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে তার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এব্যাপারে ভূক্তভোগী মোস্তাফিজুুর রহমান মোজ্জামেল বলেন, ভোররাতে বিষয়টি জানার পর আমি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে আসি। এসময় আমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে ১০টি নতুন তালা ঝুলতে দেখি।
তিনি বলেন, আমার বিরোধ মসজিদ কমিটির সাথে। তারা এঘটনা ঘটিয়েছে। যদি মালামাল চুরি হবে তাহলে দোকানে তালা কেন মারবে? একারনে তদন্তপূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারের জন্য পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এব্যাপারে নৈশপ্রহরী শফি বলেন বলেন, এঘটনা তারা ঘটিয়েছে যাদের সাথে মোজাম্মেলের বিরোধ রয়েছে। আমি ছাড়াও ওই বাজারে আরও ৪জন ব্যক্তি নৈশ প্রহরীর কাজ করে। আপনি সবাইকে এক জায়গাতে করেন। তাহলে নাম বলা সম্ভব হবে। লুটকৃত মালামাল কোথায় রাখা হয়েছে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাস্তার মূল ফটকের দায়িত্বে ছিল নৈশ প্রহরী নজু। আপনি ওর কাছে শুনলে ও বলতে পারবে।
এদিকে শফির কথার সত্যতা জানতে নজুর বাসায় গেলে তিনি গণ্যমাধ্যমের উপস্থিতি দেখে বাসা থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান।
এব্যাপারে অভিযুক্ত মুকুল, গফুরসহ অন্যান্যদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার তদন্ত ওসি বিশ্বজিত অধিকারী বলেন, তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।