চট্টগ্রাম, ১৯ চৈত্র (২ এপ্রিল) : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিকদের দেশের দূত উল্লেখ করে বলেছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে আক্রান্ত শিপিং কর্পোরেশন জাহাজের নাবিকরা মনোবল হারায় নি। তারা দৃঢ় মনোবল বজায় রেখে সরকারের সহযোগিতায় নিরাপদ স্থানে সরে যেতে সক্ষম হয়েছে।

পাশাপাশি সরকার দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতায় আক্রান্ত নাবিক ও মারা যাওয়া একজন নাবিকের লাশ অল্প সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এ কাজটি সরকারের জন্য সহজ ছিল না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারনে এটা করা সম্ভব হয়েছে। তাই আক্রান্ত নাবিকদের দৃঢ় মনোবল ও সরকারের কূটনৈতিক দক্ষতা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আজ চট্টগ্রামের ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটে এ ইনস্টিটিউটের ২৩তম ব্যাচ ও মাদারীপুর শাখার ১২তম ব্যাচ প্রশিক্ষণার্থী নাবিকদের মুজিববর্ষ প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।

এবারের ব্যাচে দুই শাখা মিলে ১২৭ জন নাবিক তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে।

নাবিকগণ জাতীয় পতাকা ধরে দেশের ভাবমূর্তি বজায় রাখার পাশাপাশি আরো উজ্জল করার শপথ গ্রহণ করেছেন। এখন সমুদ্রগামী জাহাজে তাদের কর্মজীবন শুরু হবে। তারা সমুদ্রগামী জাহাজের ক্যাপ্টেন, চীফ ইঞ্জিনিয়ার, চীফ অফিসার, সেকেন্ড অফিসার, ৩য় শ্রেণির ডেক ও ইঞ্জিনিয়ার অফিসার এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদে কাজে যোগদানের মাধ্যমে দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। প্রশিক্ষণ সমাপনকারী নাবিকদের অভিনন্দন

জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, উপমহাদেশের প্রাচীনতম ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটকে মেরিটাইম কর্মকান্ডের কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করার সরকারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এখানে সিমুলেটর বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ব্রীজ সিমুলেটর, ইঞ্জিন সিমুলেটর এবং হাই ভোল্টেজ সিমুলেটর স্থাপন করা হয়েছে।

এসব সিমুলেটরের মাধ্যমে অফিসার ও রেটিংসদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে এ সেক্টরে দক্ষ জনবল সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, মাদারীপুর শাখার নতুন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। জুন মাসে প্রকল্প বুঝে নেওয়া হবে। ফলে সেখানে প্রতি ব্যাচে ৩ শত জন করে দুই ব্যাচে বছরে ৬ শত জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হবে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কুড়িগ্রামের চিলমারিতে নতুন আরেকটি শাখা স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণ চলছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল ক্যাপ্টেন আতাউর রহমান বক্তৃতা করেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দেশী-বিদেশী জাহাজ মালিক, শিপিং এজেন্ট ও তাদের প্রতিনিধিসহ নৌপরিবহন সেক্টর সংশ্ল্ষ্ঠি ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এবারের ব্যাচে বিএসসি’র সৌজন্যে শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ড গোল্ডমেডেল লাভ করেন নাবিক তাসওয়ার জাহান। বেস্ট এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজ সিলভার মেডেল লাভ করেন নাবিক আতিফ আকবর নিশাত। প্রতিমন্ত্রী তাদের পুরস্কার প্রদান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *