ডেস্ক রিপোর্ট : এবার প্রশাসনের সামনে তালা ভেঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরির অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার শিক্ষা দস্যুখ্যাত বর্হিস্কৃত অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামাননের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরার বিনেরপোতায় এ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজে।

ইতোমধ্যে তার জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্র।

এদিকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হওয়ার পরে নড়ে চড়ে বসেন তিনি, দীর্ঘ আড়াই বছর পরে এক দল বাহিনী নিয়ে তিনি কলেজ দখলে নিতে তালা ভাংচুরসহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটান।

কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ভাংচুরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক সুশান্ত মন্ডল জানান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড হতে জাল-জালিয়াতিপূর্বক ১৮টি কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন গ্রহণ, ১৮টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির আজীবন সভাপতি, একই জমি ও অবকাঠামোর ছবি দিয়ে একাধিক প্রতিষ্ঠান অনুমোদন, পরিত্যাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ৩য় তলা ভবনের একইদাগ/ খতিয়ানের ৪টি জাল দলিল দিয়ে ৪টি স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

পাইকগাছা উপজেলার কাছিঘাটাতে দোকানঘর ভাড়া নিয়ে পিতা-মাতার নামে ২টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামান।

সে সব কলেজে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়া এড. আব্দুর রহমান কলেজে অধ্যক্ষ থাকার সুযোগে শিক্ষক নিয়োগের অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

কলেজের সংরক্ষিত তহবিল আত্মসাতসহ এম এ সনদ জালিয়াতি করে নিজের স্ত্রী সেলিনা সুলতানাকে অত্র কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক পদে দিয়ে এমপিও ভুক্ত করনের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রনলায় ও যশোর শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক এ পর্যন্ত তার গৃহিত ও উত্তোলিত বেতন ভাতাদি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরৎসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক গত ০৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে আক্তারুজ্জামান কে কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। এবং এম এ সনদ জালিয়াতির জন্য তার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গভর্নিংবডি ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন।

এদিকে বহিস্কারের পরও আখতারুজ্জামান বাড়িতে বসে কলেজে সীল ও প্যাড ব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তরে ভূয়া স্মারকে দরখাস্ত করে যাচ্ছেন।

এমনকি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্রের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ব্যাংকে ভূয়া পদত্যাগ পত্র দাখিল করেছেন। এঘটনায় সরদার রমেশ চন্দ্র থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক তার বেতনভাতাদি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেলতের জন্য পি,ডি,আর এ্যাক্ট ১৯১৩ তে মামলার জন্য বলা হয়েছে। সংরক্ষিত তহবিল আত্মসাতের জন্য আদালতে মামলা চলছে।

কিন্তু তারপরও জালিয়াতি করে বিভিন্নভাবে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন আখতারুজ্জামান। সর্বশেষ রবিবার সকালে কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে কলেজে আসেন।

এক পর্যায়ে বর্হিস্কৃত অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামান ও তার লোকজন কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ভেঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে গেছে।

এব্যাপারে কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক ঘটনাস্থলে দাড়িয়ে সাংবাদিকদের জানান, আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির ফোন পেয়ে আমরা এসেছি তবে কলেজের ভেতরে কি হয়েছে সে ব্যাপারে আমাদের জানা নেই।

এব্যাপারে বর্হিস্কৃত অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামান জানান, তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা।

অপরদিকে তার জালিয়াতির কার্যকলাপের তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এ্যাড. আব্দুর রহমানের কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *