ডেস্ক রিপোর্ট : সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে এবং সাতক্ষীরা জেলা ভিত্তিক চারদফা লকডাউনের শেষ দিনে সাতক্ষীরায় বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে একযোগে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশসহ আইনশৃখংলা বাহিনীর সদস্যরা।
জেলার সাতটি উপজেলায় নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার সকাল থেকে সাতক্ষীরা শহরে মহড়া দিতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃখংলা বাহিনীর সদস্যদের।
সাতক্ষীরা জেলায় স্থানীয় জেলা প্রশাসন ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যে কারণ কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজিনীয় জিনিষপত্রের বেচাকেনা বেলা ১১ টার মধ্যে শেষ করতে হয়েছে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন শাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে উপসর্গ নিয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৪৮ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭ টি পজেটিভ এসেছে। যার শতকরা হার ৩৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। এপর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৪ জন। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ৩৫৪ জন।
করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮১৮। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২২ জন করোনা আক্রান্ত ও ২৫৭ জন উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন। বেসরকারি হাসপাতালে ১৬জন করোনা আক্রান্ত ও ১২১ জন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মোট চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৪১৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৫ জন। হোম আইসোলেশনে আছেন ৭৮০ জন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, জেলায় সেনাবাহিনীর ১০ টি পেট্রোল টিম মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে সাত উপজেলায় সাতটি পেট্রোল টিম ও রিজার্ভ রাখা হয়েছে আরো তিনটি পেট্রোল টিম। এছাড়া জেলায় তিন প্লাটুন বিজিবি ও পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও আনসার ব্যাটেলিয়ন সদস্য নামানো হয়েছে।
জেলায় একজন করে ম্যাজিস্টে’র নেতৃত্বে ২২টি ভ্রাম্যমান আদালত টহল দিচ্ছে। তিনি আরো জানান, জেলাবাসীকে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ঘর থেকে বাইরে না বের হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অকারণে বের হলেই তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এদিকে, সরকারের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই ঘর থেকে বের হয়েছে কিছু মানুষ। শহরের অধিকাংশ দোকারপাট বন্ধ রয়েছে। লকডাউনে জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার গণপরিবহন। এছাড়া শহরের বিভিন্নস্থানে কিছু মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
যশোর সেনানিবাসের ৫৫ পদাতিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন শামস জানান, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন কার্যকর করার জন্য অসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। মোবাইল কোর্টে অংশ নিচ্ছে।
এদিকে সাধারণ মানুষকে ঘরে ফেরাতে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি দেলোয়ার হুসেনের উদ্যোগে শহরের মোড়ে মোড়ে লকডাউন প্লাকার্ড স্থাপন করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২ টায় সাতক্ষীরা নিউমার্কেট মোড় থেকে এ প্লাকার্ড বসানো শুরু হয়।
পরবর্তিতে সঙ্গীতা মোড়, সদর হাসপাতাল মোড়, খুলনা রোড মোড়, নারকেল, তলা ব্রিজ, পাকাপুল, কাটিয়া, কদমতলা, আমতলাসহ শহরের উল্লেখযোগ্য পয়েন্টে লকডাউন লেখা প্লাকার্ড বসিয়ে মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ করা হয়।