হাফিজুর রহমান শিমুল : দু’সন্তানের জননীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ঘরের মেঝেতে ফলে রেখে দরজায় ছিকল লাগিয়ে পালিয়েছে স্বামী।
ঘটনাটি রবিবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বাজার গ্রাম রহিমপুরের যমুনা নদীর তীরের বাসিন্দা ছবিলার রহমানের বাড়ির ভাড়া বাসা থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের নাম রোজিনা খাতুন (৩৩)। সে কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরের শেখ আবু রায়হানের মেয়ে ও ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
কালিগঞ্জ উপজেলা সদরের ফুলতলা মোড়ের মুরগি বিক্রেতা ও বাজারগ্রাম রহিমপুরের আবু হাসান জানান, আড়াই বছর আগে দু’ সন্তানের জননী তার বোন রোজিনাকে তালাক দেয় প্রথম স্বামী ধলবাড়িয়ার শেখ রবিউল ইসলাম। এরপর বাপের বাড়িতে থেকে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও ছাত্রাবাসে থেকে কাজ করে নিজের খরচ চালাতো।
আবু হাসান আরো জানান, মোবাইল ফোনে পরিচয় সূত্রে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরের মোহনপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে বাসচালক শফিকুল ইসামের(৩৩) সঙ্গে রোজিনার বিয়ে হয় দেড় বছর আগে। গত পাঁচ মাস যাবৎ তারা কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে ছবিলার রহমানের বাড়িতে ভাড়া থাকতো।
শফিকুল কোন কাজ না করায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মোবাইল ফোনে ছবিলার রহমানের বাড়ির একজন ভাড়াটিয়া আম ব্যবসায়ি আব্দুর রব তাকে মোবাইল ফোনে জানায় যে রোজিনাকে সকাল থেকে তারা বের হতে দেখেননি। দেখা যায়নি ঘাতক শফিকুলকে।
শনিবার রাতে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডান আওয়াজ তারা পেয়েছিলেন। রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও ইউপি সদস্য শেখ খায়রুল ইসলামের সহায়তায় তারা দরজার ছিকল খুলে রোজিনার লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারনা করা হচ্ছে সাংসারিক বিরোধের কারণে শফিকুল শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে লাশ ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে বাহিরে থেকে দরজায় ছিকল টেনে দিয়ে পালিয়ে যায় শফিকুল।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, রবিবার রাত ১১টার দিকে রোজিনার লাশ তার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে সাধারণ ডায়েরী মূলে সোমবার (১৬ মে) সকালে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অভাবের কারণে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে রোজিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ মেঝেতে ফেলে দরজায় ছিকল তুলে দিয়ে শফিকুল পালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আবু হাসান বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।