কুষ্টিয়া প্রতিনিধি(কাজী সাইফুল) : কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার রেস কাটতে না কাটতেই কুমারখালীতে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যের আংশিক (নাক ও মুখ) ভেঙেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া মহাবিদ্যালয়ের সামনে স্থাপিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাষ্কর্য ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়া মহাবিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী মো. খলিলুর রহমানকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে জড়িতদের খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যেই অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী নেতা। তিনি ‘বাঘা যতীন’ নামেই সকলের কাছে সমধিক পরিচিত। ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।
বাঘা যতীন ছিলেন বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন ‘যুগান্তর দলে’র প্রধান নেতা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে কলকাতায় জার্মান যুবরাজের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে তিনি জার্মানি থেকে অস্ত্র ও রসদের প্রতিশ্রুতি অর্জন করেছিলেন।
বাঘা যতীনের জন্ম ১৮৭৯ সালে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানায়। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯১৫ সালে ১০ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, যারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করেনা, তারা এমন নেক্কারজনকত কাজ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাঘা যতীনের ভাষ্কর্য ভাঙার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাঘা যতীনের ভাষ্কর্য ভাঙার রহস্য উদঘাটনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারবো।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতের কোনো এক সময় কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার উদ্যোগে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশ ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। পরে অভিযান চালিয়ে ৫ ডিসেম্বর রাতে প্রথমে এক মাদরাসার দুই শিক্ষক এবং পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার ভোরে দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়।