চট্টগ্রাম, ৭ শ্রাবণ (২২ জুলাই): আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাংবাদিকরা ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করতে পারে, যে অব্যক্তদের পক্ষে আমাদের কথা বলা দরকার, সাংবাদিকরাই পারে তাদের কথা ব্যক্ত করতে, সমাজ যেদিকে তাকায়না সেদিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করতে।

আজ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসকল কথা বলেন।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ’র সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

বর্তমানে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কোনো সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবার তিন লাখ টাকা পাচ্ছে, কেউ অসুস্থ হলেও টাকা পাচ্ছে। সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের পড়ালেখার ক্ষেত্রেও অনুদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন করোনাকালীন সহায়তার জন্য। ঈদুল আযহার আগেই সেগুলোর বিতরণ শুরু হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশটা যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটাও মানুষকে আমাদের জানাতে হবে। তাহলে মানুষ আরো স্বপ্ন দেখবে। দেশও স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। মানবিক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, যাকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ আখ্যা দিয়েছে, তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। অথচ এটার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোন জোরালো দাবি ছিল না।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, এমন অনেক বিষয় আছে সমাজ সেদিকে তাকায়না। রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ানো পাগলেরও একটা গল্প আছে, ফ্যালফ্যাল করে তাকানো মানুষটার কিছু বেদনা আছে, সেই বেদনা শোনার সময় সমাজের নেই, সমাজ তাকে জিজ্ঞেস করেনা। কিন্তু একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক সেটি অনুসন্ধান করে সমাজের সামনে তুলে ধরতে পারে।

তিনি বলেন, লেখনীর মাধ্যমে সমাজকে উজ্জীবিত করতে পারেন একজন সাংবাদিক। সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক হিসেবে কাজ করে, সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয় এবং সমাজকে সঠিক পথে প্রবাহিত করতে পারে।

‘একটি বহুমাত্রিক সমাজে বিতর্ক থাকবে সমালোচনা থাকবে, কিন্তু এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও হতে হয়, নইলে যারা ভালো কাজ করে তারা কখনো উৎসাহ পাবে না’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপিসহ কেউ কেউ মনে করে, তারা সরকারে থাকলে সব ভাল, আমরা সরকারে থাকলে সব খারাপ, এটা ঠিক নয়। দেশটা কি এমনি এমনিতে এগিয়ে গেল ? গত সাড়ে বার বছরে মানুষের যে উন্নয়ন হয়েছে তা কল্পনাতীত, আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই তা সম্ভব হয়েছে।’

চট্টগ্রামের অন্যতম নান্দনিক ও ঐতিহাসিক স্থান সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং-সিআরবি’র পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সিআরবি পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ‘চ্যাম্পিয়ন অভ দ্যা আর্থ’ পদকে ভূষিত বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কোন কাজ হবেনা। সিআরবিতে পরিবেশ নষ্ট হোক, গাছপালা কাটা হোক সেটি আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাইনা। সরকার জনগণের বিপক্ষে কোন কাজ করবেনা। আমি বিষয়টি যথাযথ জায়গায় উপস্থাপন করবো।’

এর আগে দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নে স্থানীয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে সর্বসাধারণের জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিবন্ধন ও টিকা কার্ড সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *