রাহাত রাজা : গাভী পালন করে সচ্ছলতা অর্জনের অনন্ন নজির সৃষ্টি করেছেন পুরাতন সাতক্ষীরার আব্দুর রাজ্জাক। তিনি পাঁচ বছর যাবত গরুর খামার পরিচালনা করেন । গত কোরবানী ঈদে খামারের বেশির ভাগ গরু বিক্রয় করেছেন । তার খামারে এখন ৬টি অস্ট্রেলিয়ান গাভী রয়েছে যার মধ্যে একটি গাভী ২০ কেজি এবং আর একটি গাভী ২৫ কেজি করে দুধ দিয়ে থাকে।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটি গাভীর খামারের জন্য গাভী যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ তার বাছুরটিও। বাছুর না হলে দুধ হয় না। কয়েক মাস পর ওই বাছুরটি বিক্রি হয় ৭০ হাজার থেক ১ লক্ষ টাকার বেশি দামে। তার মতে ১ লাখ টাকার একটি গাভী থেকে বছরে ন্যূনতম ৬০ হাজার টাকা আয় হয়ে থাকে।

তার অস্ট্রেলিয়ান গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে যে বাছুর গুলো নেয়া হয় তা ১৩ মাসেই কৃত্রিম বীজ গ্রহনের উপযুক্ত হয়ে যায়। তাছাড়া বীজ দেয়ার ৯ মাসে গাভী বাচ্চা দিয়ে থাকে।

আব্দুর রাজ্জাকের সারাদিনের বেশির ভাগ সময় কাটে খামারে। গাভী গুলো খাবার খাওয়ানো, দুধ দোয়ানো, গোসল করানো হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, তার একটি গাভী প্রতিদিন সবুজ ঘাষ,দানাদার খাবার, বিচলী দিয়ে ৩০০ টাকার খাদ্য খেয়ে থাকে। এবং সেই গাভীটি ২০ কেজি দুধ দেয় যা গোয়াল থেকে ৮০০ টাকা মূল্যে বিক্রয় হয়ে যায়।

গাভী পালনের সবেচেয় বড় সুবিধা হলো প্রতিদিন দুধ বিক্রয় করে গাভীর খাবার যোগান দেয়া যায়। তাছাড়া বাজারে গাভীর দাম সব সময় ভালো পাওয়া যায়।

তরুন খামারীদের উদ্দেশ্যে আব্দুর রাজ্জাক বলেন শুরুতে একটি গাভী দিয়ে পালন করা উচিত। এর পর গাভীপালন সম্পর্কে ভালো জ্ঞান অর্জন করে বৃদ্ধি করা ভালো। পরিকল্পিতভাবে গাভী পালন একটা লাভজনক কার্যক্রম অল্প মাঝারি বেশি সব ধরনের পুঁজি দিয়ে সুষ্ঠভাবে গাভী পালন করলে অনেক লাভবান হওয়া যায়।

গাভী পালনের জন্য ঘরটি মোটামুটি খোলামেলা জায়গায় হতে হবে; বাঁশ, ছন, খড়, পাটখড়ি দিয়ে ঘর নির্মাণ। ঘরের মেঝে ঢালু ও ড্রেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে চেনা ও পানি গড়িয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। খাদ্য ও পানির পাত্রগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার করা; খাওয়া শেষ হলে পাত্রগুলো ঢেকে রাখতে হবে। গরুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে।

প্রতিদিন নিয়মিত গোয়াল ঘরের গোবর-চেনা পরিষ্কার করে নির্দিষ্ট স্থানে বা গর্তে জমা করতে হবে। যা পরবর্তীতে মূল্যবান সারে পরিণত হয়। গরুর গায়ের আঠালি, ডাসা (মাছি), জোঁক অবাঞ্ছিত পোকামাকড় বেছে ফেলতে হবে। গরুর স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে গবাদিপশুকে গোবসন্ত, তরকা, বাদলা, গলাফুলা, ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে; গবাদিপশুর রোগ দেখা দিলে প্রাণিচিকিৎসক বা নিকটস্থ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

আব্দুর রাজ্জাকের পরামর্শে তার গ্রামের অনেকেই গাভী খামার করে সাফল্য পেয়েছেন। তিনি বলেন যদি কেউ নতুন খামার করতে চায় আমার সাথে যোগােযোগ করলে 01718125205 সকল ধরনের পরামর্শ দিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *