চট্টগ্রাম, ২৭ আশ্বিন (১২ অক্টোবর) : বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের সুফল পাচ্ছে চট্টগ্রামের মানুষ। করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকার টিকা প্রদানের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে।
চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৭ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলা এবং মহানগরীর নির্দিষ্ট টিকাকেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন মানুষ দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে টিকা নিচ্ছে। এছাড়া গণটিকা কার্যক্রমের কারনে প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক মানুষ টিকা গ্রহন করতে পেরেছে।
এছাড়া জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব মেনে চলতে উদ্বুদ্ধকরণ, হাত ধোয়া, সঠিক নিয়মে মাস্ক ব্যবহার প্রভৃতি কার্যক্রমের কারনে করোনা সংক্রমন সরকারের প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন অফিস, গণমাধ্যমসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ভূমিকার কারনে করোনা মোকাবেলায় চট্টগ্রাম অঞ্চলসহ পুরোদেশ সফলতার পর্যায়ে পৌছে গেছে। ইতোমধ্যে স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আবাসিক হলগুলোও খুলে দেয়া হচ্ছে।
বিগত ২৪ ঘন্টায় (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের হার ১.৫৩ শতাংশ। এসময় মাত্র ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোন কোন দিন মৃত্যুশুণ্যও থাকে চট্টগ্রাম অঞ্চল। সংক্রমণের হার প্রতিদিন কমছে।
বিগত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজসহ চট্টগ্রামের ১৩টি করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৬২৮ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৫ জন পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মহানগরীর ১৩ ও উপজেলার ১২ জন। সনাক্তের হার ১.৫৩ শতাংশ। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট সনাক্ত হয়েছে ১ লক্ষ ২ হাজার ৫০ জন। এদের মধ্যে মহানগরী এলাকার ৭৩ হাজার ৮৫৯ জন ও বিভিন্ন উপজেলার ২৮ হাজার ১৯১ জন। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩১২ জন করোনায় মৃত্যু বরণ করেছে। এদের মধ্যে মহানগরীতে ৭২০ জন ও বিভিন্ন উপজেলায় ৫৯২ জন।
বিগত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামের ১৩ করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে ৪টি কেন্দ্রে কোন পজিটিভ সনাক্ত হয়নি। এগুলো হলো কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, নগরীর মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল, এপিক হেলথ কেয়ার ও ল্যাবএইড।
চট্টগ্রামে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত ২৭ লাখ ৪১ হাজার মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। এর মধ্যে ২১ লাখ ৩৮ হাজার ৬০০ জন সিনোফার্ম, ১ লাখ ৮ হাজার জন অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৪০০ জন মডার্নার টিকা পেয়েছে।
বিভিন্ন উপজেলায় ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪৭৪ জনকে সিনোফার্ম অ্যাস্টাজেনেকা ও মডার্নার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৭১ জনকে দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর পর্যন্ত টিকা মজুদ ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯২ ডোজ। প্রতিদিনই টিকা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কয়েকদিন পরপরই টিকা আসছে। টিকার সংকট হচ্ছেনা। চট্টগ্রামে প্রায় ৩২ লাখ ২১ হাজারের বেশি মানুষ টিকার নিবন্ধন করেছেন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় হতে প্রকাশিত তথ্যমতে এসব জানা গেছে।
সরকার চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে ২০-৩০ শতাংশের বেশি মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। সিনোফার্ম টিকার পাশাপাশি মডার্ণা ও ফাইজারের টিকা নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাবার পর আবার ভারত হতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ চালান ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।