চট্টগ্রাম, ৬ কার্তিক, (২২ অক্টোবর) : জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় ২৪ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী জাতীয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৪ চট্টগ্রাম জেলায় অনুষ্টিত হবে । শুক্রবার ও সরকারী ছুটির দিন ব্যতীত মোট ১৮ দিনের প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জেলার ১৫ উপজেলায় ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বমোট ৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৮ জন কিশোরীকে এইচপিভি ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আজ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত জেলা পর্যায়ের সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।
তাদের মধ্যে ৫ম-৯ম শ্রেণির ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩০ জন কিশোরী ও স্কুল বহির্ভূত কমিউনিটির ৭ হাজার ৫১৮ জন কিশোরীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধন দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও জন্মনিবন্ধন বিহীন কিশোরীদেরকে হোয়াইট লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র সমূহে টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে ৮ দিন স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রসমূহে দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বিত উদ্যোগে জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সিভিল সার্জনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় তিনি এ ভ্যাকসিনে কোন ধরণের ঝুঁকি বা বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ভ্যাকসিন বিষয়ে অপপ্রচার বা গুজব রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানান।
আগামী ২৪ অক্টোবর সকাল ৮টায় নগরীর জামালখানস্থ ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভাগ, মহানগর ও জেলা পর্যায়ে এ ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মোঃ নওশাদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফ.এম জাহিদুল ইসলাম। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মোঃ নুরুল হায়দার, এসএমও (ম্যালেরিয়া) ডা. মোহাম্মদ আবুল কালামসহ দপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন আরো বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিলে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যাবে। এটি কৈশোরকালীন স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে। এই মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে বর্তমান সরকার সারাদেশে আবারও বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে।
সিভিল সার্জন বলেন, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে দেশের সাতটি বিভাগে কিশোরী ও ছাত্রীদের মাঝে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে, যা চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ৯০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সূত্র-পিআইডি-চট্রগ্রাম