বিশেষ প্রতিনিধি : মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নাকাল হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরাবাসি। বিশেষ করে সাতক্ষীরা পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এবং সরকারি খাল ও পানি নিষ্কাশনের পথ দখল করে অপরিকল্পিত মাছের ঘের স্থাপনের ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই বিভিন্ন এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে শহরের ইটাগাছা এলাকায় বসবাসকারীরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম-সদস্য সচিব আলি নূর খান বাবুল বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার ইটাগাছা, কামালনগর, বদ্দিপুর, পুরাতন সাতক্ষীরা, ঘুড্ডির ডাঙ্গি, রসুলপুর, মেহেদিবাগ, বকচরা, সরদারপাড়া, পলাশপোলসহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন জলমগ্ন।
অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অবৈধ খাল দখল, নদী ভরাটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে পানি অপসারণ ব্যবস্থা। ফলে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা।
তিনি আরও বলেন, অপরিকল্পিত গুটি কতক ঘের মালিকের কারণে পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে শহরের নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। মৌসুমের শুরুতেই সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট। বাড়ির উঠোনে পানি। ঘরে পানি ছুঁইছুঁই অবস্থা।
অন্যদিকে চারদিকে পানি জমে থাকায় অনেক কাঁচা ঘর ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
নাগরিক নেতা এড. ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, সাতক্ষীরা শহরের পানি নিষ্কাশনের পথগুলো প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে মাছের ঘের বানিয়েছে। বারবার এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবি জানানো হলেও প্রশাসন তা আমলে নেয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিপাতে পানিতে ডুবে হাবুডুবু খায় পৌরসভার মানুষ।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আনিসুর রহিম বলেন, জলাবদ্ধতার কবল থেকে সাতক্ষীরার মানুষকে মুক্ত করতে ইতোমধ্যে ২১দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের কারণে কোন দফায় কাজ হচ্ছে না।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য শাহনাজ পারভিন মিলি বলেন, এমনিতে নদীগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্কার হয় না তাতে ঘের করে এলাকার পানি সরবরাহের পথ বন্ধ করে অসাধু ঘের মালিকরা এলাকার সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। পৌর এলাকার ২, ৩, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে।
সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী বলেন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য যে তহবিল প্রয়োজন তা পৌরসভার নেই। আইনী জটিলতার কারণে অনেক সময় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারেন না। স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, জার্মান তহবিলে ম্যানহোল ও ঢালাই ড্রেন করে এ সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।