চট্টগ্রাম, ৩০ শ্রাবণ (১৪ আগস্ট) : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন খুনি ও বিশ্বাসঘাতক। জাতির সামনে তার মুখোশ উম্মোচন করা হবে। তিনি আজ চট্টগ্রাম থিয়েটার হলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ এর অনেক আগে থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। রাজনৈতিক কার্যাবলির মাধ্যমে তিনি জাতিকে ধীরে ধীরে স্বাধীনতার পথে অগ্রসর করছিলেন। ১৯৫১ সালের কমরেড মনি সিং এর বক্তৃতায় এবং চট্টগ্রামের একজন লেখকের লেখনিতে তাহা পরিস্কার ফুটে ওঠেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাজনীতির কবি ও মহানায়ক। তিনি জানতেন কিভাবে একটি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দেওয়া যায়।
স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যায়। তাই তিনি কৌশলে ৭ মার্চের ভাষণে কার্যত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। সে বিষয়টি তৎকালীন পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে ফুটে ওঠেছে। তাঁর ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে নিরস্ত্র বাঙ্গালি জাতি রাতারাতি সশস্ত্র জাতিতে পরিণত হয়েছে। তিনি স্বাধীনতার জন্য মানুষের মনন তৈরি করেছেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে জীবনবাজী রেখে যুদ্ধ করে বাঙ্গালিরা পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাজিত করেছে। পৃথিবীর খুব বেশি নেতা ব্যাপক মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বেলিত করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু পেরেছেন। তাঁর তুলনা বিশে^ বিরল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ঘাতকচক্র শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি। তাঁর পুরো পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে ঘাতকরা বাঙালির চেতনাকে পদানত করতে চেয়েছিল। অনেকে সে স্রোতে মিশে স্বাধীনতার চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। পাকিস্তানীদের দোসর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে তারা রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছে।
মন্ত্রী বানিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দিয়েছে। অনেকে বঙ্গবন্ধুকে খাটো করেছে। কিন্তু এসব অপশক্তি বেশিদিন টিকতে পারেনি। এদেশের সাধারণ জনতা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু রাজনীতির ধারা বজায় রাখা ও কলুষমুক্ত রাজনীতি চর্চার জন্য স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি থেকে বাদ দিতে হবে। যারা বঙ্গবন্ধুকে খাটো করেছে বা এখনো করছে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দুরদর্শী ও জাদুকরি নেতৃত্বের কারনে দেশ আজ উন্নয়নের মহিসোপানে আরোহণ করেছে। আমরা ক্ষুধাকে জয় করতে পেরেছি। অনেক বিশেষজ্ঞের আশংকা অমুলক প্রমাণ করে করোনা মহামারিতে গত দেড় বছরে দেশে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। লকডাউনেও আমাদের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। সে মোতাবেক কাজ চলছে। গণটিকা কার্যক্রম সফল হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা টিকা নিয়ে অপপ্রচার করলেও তারা সবাই টিকা নিচ্ছেন।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সহসভাপতি এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদসহ সহসভাপতিগণ, যুগ্ম ও সহসাধারণ সম্পাদকগণ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।