ডেস্ক রিপোর্ট : শুরুতে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলের প্রতিরোধ। পরে এজাজ প্যাটেলের ঘূর্ণি। বাংলাদেশকে ১২৯ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে ৫২ রানের দারুণ এক জয়ে পাঁচ টি-টুয়েন্টির সিরিজে ঘুরে দাঁড়াল নিউজিল্যান্ড।

প্রথম দুটি ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টাইগাররা ৭ উইকেট ও ৪ রানের জয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় ২-০তে। তৃতীয় ম্যাচে জিতে ২-১ করল কিউইরা। চতুর্থ ম্যাচ বুধবার।শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ১২৮ রান তুলেছিল সফরকারীরা। জবাব দিতে নেমে ১৯.৪ ওভারে ৭৬ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১০০তম আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে নেমেছিলেন। সতীর্থ ব্যাটসম্যানরা তাকে জয় উপহার দিতে পারেননি। উইকেট ছুঁড়ে আর বাজে ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন সকলে।

টি-টুয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহের শঙ্কাই পেয়ে বসেছিল একসময়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই কলকাতায় করা সেই ৭০ রানের ধাক্কা পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে যদিও। বড় হার এড়ানো সম্ভব হয়নি।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই এলোমেলো হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৩২ রানে ফিরে যান টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান। খানিক পর ফিরে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ হোসেন। পরে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি।

অথচ ১৭ বলে ২৩ রানের ওপেনিং জুটি ভিন্ন কিছুর আভাস দিচ্ছিল। লিটন দাসের অতিরিক্ত শট খেলার প্রবণতায় সেটি বড় হয়নি। ৩ চারে ১১ বলে ১৫ করে ফিরে যান লিটন।

তিনে এসে ৪ বলে ১ রানের বেশি দিতে পারেননি মেহেদী। চারে নামা সাকিব যেন হয়ে গেলেন শিশুসুলভ! মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই তুলে মারতে গেলেন প্যাটেলকে, ফলাফল মিলল, রানের খাতা খোলার আগেই নিকোলসের ক্যাচে পরিণত হলেন।

আরেক ওপেনার নাঈম শেখ ভালো শুরুর পর ছন্দ হারান। ২ চারে ১৯ বলে ১৩ রানে শেষ তিনি, রবীন্দ্রর বলে বোল্ড হন। মাহমুদউল্লাহ ৩ রানে নিকোলসকে ক্যাচ দেন প্যাটেলের বলে। কিউই স্পিনারের পরের বলেই রানের খাতা খোলার আগে বোল্ড আফিফ হোসেন।

স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেবল ব্যতিক্রম মুশফিকুর রহিম। ৩৭ বলে ২০ করে অপরাজিত থেকে যান একপ্রান্তে। মারতে পারেননি কোনো চার-ছয়। পুরো বাংলাদেশ ইনিংসেই কোনো ছয় নেই। ওপেনিংয়ে দুজনের পাঁচ চারের পর আর একটি চার মারতে পেরেছেন কেবল সাইফউদ্দিন।

এজাজ প্যাটেল ৪ ওভারে ১৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। সমান ওভারে ১৫ রানে ৩ উইকেট কোল ম্যাককোনির। ১৩ রানে ১ উইকেট রাচিন রবীন্দ্রর। ১৪ রানে ১ উইকেট স্কট কুগ্গেলেজিন ও ৩ রানে ১ উইকেট ডি গ্র্যান্ডহোমের। একমাত্র যিনি উইকেট পাননি, সেই জ্যাকব ডাফিও ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৪ রান।

রোববার টসে হেরে আগে বোলিংয়ের আমন্ত্রণ পান মাহমুদউল্লাহ। বলে শুরুর অর্ধে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলেছেন মোস্তাফিজ-সাইফউদ্দিনরা। ইনিংসের পরের অর্ধে প্রতিরোধের মুখে পড়ে বাংলাদেশ।

শুরুটা করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১০ বলে ১৫ করা ফিন অ্যালেনকে কাটারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান। নিজের প্রথম ওভার উইকেট-মেডেন করেন বাঁহাতি পেসার।

পরের আঘাত সাইফউদ্দিনের। ২০ বলে ২০ করা উইল ইয়াংকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। তৃতীয় আঘাতও পেস-অলরাউন্ডারের, এবার রানের খাতা খোলার আগেই এলবিতে সাজঘরের পথ দেখান কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে।

আরেক ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র টিকে ছিলেন। তাকে ফেরাতে এগিয়ে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। বোল্ড করেন। ২০ বলে ২০ রানের ইনিংস থামে। দ্বিতীয় ম্যাচের অপরাজিত ফিফটিয়ান টম ল্যাথাম এদিন করতে পেরেছেন সবে ৫ রান। প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে পাঠান মেহেদী হাসান।

প্রথম ম্যাচে ৬০ রানে গুঁটিয়ে যাওয়া নিউজিল্যান্ড তখন ১০.৫ ওভারে ৬২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছে। উইকেটে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল। দুজন পরে প্রতিরোধ গড়ে বসেন।

নিকোলস ও ব্লান্ডেল ৫৫ বলে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের জুটি। নিকোলস অপরাজিত থাকেন ৩৬ রানে, ৩ চারে ২৯ বলের ইনিংস তার। ব্লান্ডেল সমান চারে ৩০ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন।

মেহেদী ৪ ওভারে ২৭ রানে এক উইকেট নেন। ২ ওভারে ১০ রানে উইকেটশূন্য নাসুম। সাকিব উইকেটশূন্য ৪ ওভারে ২৪ রানে। ৪ ওভারে এক মেডেনে ২৯ রানে ১ উইকেট মোস্তাফিজের। ২ ওভারে ১০ রানে ১ উইকেট মাহমুদউল্লাহর। ৪ ওভারে ২ উইকেট নিয়ে ২৮ রান খরচ সাইফউদ্দিনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *