চট্টগ্রাম, ০১ বৈশাখ, (১৪ এপ্রিল) : আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ বঙ্গাব্দ। ভোরের রঙিন আলোয় রাঙিয়েছে বাঙালির নব স্বপ্ন ও সম্ভাবনা। সারা দেশের ন্যায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে দিনটির শুভ সূচনা করা হয়।
জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে বাদ্যের তালে তালে গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যের লোকজ উপকরণ পালকি, পুতুল, ঘোড়ার গাড়ি, রঙিন প্ল্যাকার্ড মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ করেছে অনন্য মাত্রা।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার এস. এম রশিদুল হকসহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা শিল্পকলা ও শিশু একাডেমির কর্মকর্তা, প্রশিক্ষাক ও প্রশিক্ষানার্থী এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
দু’বছর পর নববর্ষের আনন্দ আয়োজনে প্রাণভরে শ্বাস নিতে ছুটে এসেছেন সর্বস্তরের জনসাধারণ। সিআরবির শিরীষতলায় ও ডিসি হিলে সংগীত ভবন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠনসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয়।
বর্ষবরণ উপলক্ষে সকাল ১০ টায় শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ এবং জেলা শিল্পীগোষ্ঠিদের সহযোগীতায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর দলীয় নৃত্য ও সংগীত পরিবেশন করেন। শিল্পীরা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানে গানে বরণ করে নেন বাংলা নববর্ষকে। নাচে-গানে জমজমাট ছিল পুরো শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ।
রমজান মাস হওয়ায় এবারের আয়োজনে নগরে বসেনি মেলা, নেই নাগরদোলার আনন্দ উত্তাপ। গ্রহণ করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্ন এলাকা সিসিটিভির আওয়াতায় আনা হয়েছে। র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিয়োজিত আছেন নিরাপত্তা কর্মীরা।
রমজান ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নববর্ষ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা, উপজেলায়, প্রামেগঞ্জের পাড়ায় মহল্লায় সংক্ষিপ্ত পরিসরে আনন্দ ব্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রাম্য মেলার আয়োজন করা হয়। এমেলায় সর্বসাধারণের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। কারাগার , হাসপাতাল ও এতিমখানায় সংশিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করা হয়।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, জেলা পুলিশ সুপার এস. এম রশিদুল হক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ বদিউল আলম, অতিরক্তি জেলা ব্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ সুমনী আক্তারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।