স্টাফ রিপোর্টার: দেবহাটার ভূমিহীন অধ্যুষিত জনপদ খলিশাখালির বিস্তৃর্ন জমি ও মৎস্য ঘের দখলে নেয়ার দু’মাস পেরিয়েছে বুধবার। টানা ৬০দিন ধরে দখলচ্যুত প্রভাবশালীদের রক্তচক্ষু, হামলা, ভূমিহীন পল্লীতে অগ্নিসংযোগ আর একের পর এক মামলা সহ্য করে আন্দোলন-সংগ্রাম ও আইনী লড়াই চালিয়ে খলিশাখালিতে বসবাস করে আসছেন প্রায় দেড় হাজার ভূমিহীন পরিবার।
সময়ের সাথে সাথে ওই জনপদে ক্রমশ বাড়ছে ভূমিহীনদের সংখ্যা। সামান্য মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে দেবহাটাসহ আশপাশের উপজেলা থেকে প্রতিনিয়ত ভূমিহীন পরিবার খলিশাখালিতে গিয়ে বাসস্থান গড়ে তুলছেন।
আন্দোলন, সংগ্রামের দু’মাস অতিবাহিত উপলক্ষে পূর্ব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সেখানকার শুকিয়ে যাওয়া একসময়ের মাছের ঘেরগুলোতে নতুন করে সেখানে আন্দোলনরত ভূমিহীনদের পূনর্বাসন শুরু করেছেন সেখানকার ভূমিহীন সংগ্রাম কমিটি। শুক্রবার সকালে ভূমিহীন নাজমা খাতুন, রহিমা খাতুন, রুবিয়া খাতুন, হাসনুয়ারা বেগম ও রাবেয়া খাতুনসহ বেশ কয়েকটি অসহায় ভূমিহীন পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে প্রত্যেক মাপজরিপ করে পরিবারকে কয়েক কাঠা করে জমি বন্টন ও সেখানে বাসস্থান গড়াসহ ব্যবহারের অনুমতি দেন খলিশাখালি ভূমিহীন সংগ্রাম কমিটির নেতারা।
এসময় খলিশাখালি ভূমিহীন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা আবুল হোসেন, কমিটির সভাপতি আনারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ভূমিহীন নেতা রবিউল ইসলাম, নুরুজ্জামান, চারকুনির ইসমাইল গাজী সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে খলিশাখালির বিস্তৃর্ন জমি ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দেয়ার
উদ্যোগ গ্রহনের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
খলিশাখালির ভূমিহীন নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের দায়েরকৃত রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের পূর্বের রায়কে প্রাধান্য দিয়ে খলিশাখালির সম্পত্তি কন্ট্রোল ও ম্যানেজমেন্ট সহ ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে তা প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত প্রদানের উদ্যোগ গ্রহন এবং একইসাথে
বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। গত ৩ নভেম্বর এসংক্রান্ত শুনানী শেষে বিচারপতি এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমান এ রায় দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যেই আদালতের এসংক্রান্ত কাগজপত্র সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে পৌঁছেছে বলেও জানান ভুমিহীন নেতারা।