স্টাফ রিপোর্টার : সাতক্ষীরার দেবহাটায় গাছ থেকে পড়ে নোভা গাজী (৫৫) নামের এক বৃদ্ধের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত নোভা গাজী উপজেলার উত্তর পারুলিয়া সেকেন্দ্রা এলাকার মৃত দুখে গাজীর ছেলে। পেশায় ভ্যান চালনো পাশাপাশি গাছ কাটার কাজ করতেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পারুলিয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আমিন ফিসের মালিক নূর আমিন গাজী সম্প্রতি চারাবটতলা এলাকায় প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে বিলাস বহুল একটি বাড়ি নির্মান করছেন। কিন্তু বাড়ীর সামনে সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ মহাসড়কে ওপর থাকা কয়েকটি সরকারী মরা শিশু গাছের জন্য তার দৃষ্টিনন্দন ওই বাড়িটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল। এতে করে সেসব সরকারী গাছ কেটে ফেলতে উদ্যোগী হন নুর আমিন গাজী।
অন্যদিকে চলমান লকডাউনের কারনে ভ্যান চালানো বন্ধ থাকায় অর্থাভাবে দিন কাটছিল নোভা গাজীর। রবিবার বেলা ১১টার দিকে গাছগুলি কেটে দেয়ার জন্য নুর আমিন গাজীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গাছে ওঠেন তিনি। তাকে গাছে তুলে দিয়ে নুর আমিন গাজী গাছ থেকে কিছুটা দূরে বাড়ির সামনে দাড়িয়ে ছিলেন।
একপর্যায়ে ওই শুকনো মরা গাছের ডাল ভেঙে মাটিতে পড়েন নোভা গাজী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাৎক্ষনিকভাবে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুপুর দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানায়, গাছগুলো কাটার কাজে লাগানোর পর ওই গাছ থেকে পড়ে নোভা গাজীর মৃত্যু হলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নিহতের পরিবারকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে আতাতের চেষ্টা করছেন ধর্নাঢ্য নুর আমিন গাজী। তবে নোভা গাজীর মৃত্যুর পর এসব ঘটনা অস্বীকার করেছেন তিনি।
এব্যাপারে নুর আমিন গাজীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ১২টা) নোভা গাজীর মরদেহ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পড়ে ছিল উল্লেখ করে নিহতের স্বজনেরা বলেন, যে নুর আমিন গাজীর নির্দেশে গাছ কাটতে গিয়ে নোভা গাজীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে, অথচ মৃত্যুর পর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নিহতের মরদেহটি হাসপাতালে পড়ে থাকলেও নুর আমিন গাজী নুন্যতম খোঁজখবর নিতেও হাসপাতালে যাননি।
দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিহতের মেয়ে রূপিয়া খাতুন তার বাবার মৃত্যুর বিষয়ে তাদের পরিবারের কোন অভিযোগ নেই মর্মে দেবহাটা থানায় একটি লিখিত অঙ্গীকারনামা দিয়ে গেছেন। আমরা সেটিকে সাতক্ষীরা সদর থানায় পাঠিয়ে দিয়েছি। মৃত্যুর ঘটনায় ময়না তদন্ত হবে কিনা বা পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা কি হবে তা সদর থানা পুলিশ সিদ্ধান্ত নিবেন।