মাহমুদুল হাসান শাওন, দেবহাটা : সম্প্রতি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের অর্ন্তগত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব শেখ হামিম হাসানসহ তার প্রতিনিধি দল দেবহাটাতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মানের স্থান পরিদর্শনের পর প্রস্তাবিত কৃষি জমি বাঁচাতে নড়েচড়ে বসেছেন জমির মালিকেরা।
খেলাধুলার স্টেডিয়ামের চেয়ে পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া এসব চার ফসলী জমির মুল্য গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের কাছে বহুগুন বেশি বলে উল্লেখ করেছেন তারা।
ইতোমধ্যেই নানা কারন দেখিয়ে চাষযোগ্য জমি অধিগ্রহণ না করার দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন স্টেডিয়াম নির্মানের জন্য প্রস্তাবিত ৩ একর জমির নুন্যতম ২০ জন মালিক। বুধবার জমির রেকর্ডিয় মালিকেরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত এ আবেদনটি করেন। একইসাথে ভূমি মন্ত্রনালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, দেবহাটা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে গণস্বাক্ষরকৃত ওই লিখিত আবেদনের অনুলিপি প্রেরণ করেছেন মালিকপক্ষ।
গেল ২০২০ সালের মার্চ মাসে সাতক্ষীরার প্রত্যেকটি উপজেলার ন্যায় দেবহাটা উপজেলার ঈদগা বাজার ও পাকড়াতলার মধ্যবর্তী স্থানে সখিপুর টু দেবহাটা সড়কের দক্ষিণ পাশে কোঁড়া মৌজার ডিপি ১০, ৩৮২, ২৮৬, ১৩৬, ৩৩৮২ ও ২১৩ খতিয়ানের ৬০৭, ৬০৮, ৬০৯, ৬৬৯, ৬৭০, ৬১১, ২৭৭ ও ৬১২ দাগের তিন একর জমিতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মানের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের পাঠানো প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে ১৬ই ফেব্রæয়ারী সাতক্ষীরার সাবেক এডিসি ও বর্তমানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব শেখ হামিম হাসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল স্টেডিয়াম নির্মানের জন্য প্রস্তাবিত ওই জমি পরিদর্শন করেন। প্রকল্পটির আওতায় ২০২৩ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় জমির মালিকদের কাছ থেকে তিন একর জমি কিনে সেখানে আধুনিক মানের স্টেডিয়াম ও ভবন নির্মান করা হবে বলে পরিদর্শনকালে জানিয়েছিলেন যুগ্ম সচিব শেখ হামিম হাসান।
যদিও সরকার অধিগ্রহণকৃত জমি অর্থ দিয়ে কিনে তারপর স্টেডিয়াম নির্মান করবেন, কিন্তু স্বর্ণসমতুল্য ওই চার ফসলী প্রতিবিঘা জমির বিনিময়ে সরকারের থেকে কেমন হারে অর্থ মিলবে তা নিয়ে শঙ্কিত জমির মালিকপক্ষ ও স্থানীয় কৃষকেরা। প্রস্তাবিত ওই জমিতে বছরে নুন্যতম ৩/৪ বার ধান ও সরিষার আবাদসহ উপার্জিত অর্থে টেনে-টুনে সংসার নির্বাহ এবং গবাদি পশুর খাদ্য সংস্থান করা হয় উল্লেখ করে উক্ত জমি অধিগ্রহন না করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আবেদন পত্রটিতে স্থানীয় বিমল কুমার ঘোষ, সর্বরঞ্জন ঘোষ, তুষার কুমার, মনোরঞ্জন ঘোষ, কনিকা ঘোষ, শ্রীপদ অধিকারি, শচীন চন্দ্র ঘোষ, শিবপ্রসাদ ঘোষ, দেবপ্রসাদ ঘোষসহ নুন্যতম ২০জন মালিক তাদের চাষাবাদযোগ্য জমি অধিগ্রহণ না করার দাবিতে গণস্বাক্ষর করেছেন।