অনলাইন ডেস্ক : দেশীয় অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২১’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, ‘এর উদ্দেশ্য হচ্ছে অটোমোবাইল, অটোযন্ত্রসমূহ উৎপাদন এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনক্রমে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে দেশিয় শিল্পকে বিকশিত করা।’

‘পাশাপাশি স্থানীয় অটোমোবাইল উৎপাদনের সঙ্গে আন্তর্জাতিকমানের সহযোগিতা এবং যৌথ বিনিয়োগ সুবিধা বৃদ্ধি করা যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে বাংলাদেশে সুপরিচিত ব্র্যান্ড ও মডেলের গাড়ি উৎপাদনের সুযোগ হয়।’

তিনি বলেন, আমাদের এখানে (বাংলাদেশে) অটোমোবাইল শিল্প গড়ে ওঠার জন্য একটা সম্ভাবনা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। আর আমাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে এ শিল্প ডেভেলপ করা দরকার। যে পরিমাণে মুভমেন্ট হচ্ছে, কাজকর্ম হচ্ছে তাতে আমরা শুধু আমদানিই করব সেটা নয়, সেজন্য নিজেদেরও কিছু ডেভেলপ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অনেক কিছু চালু আছে, সেগুলোকে সিস্টেমেটিক ওয়েতে নিয়ে আসার জন্য চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। সেজন্য এই অটোমোবাইল শিল্প ডেভেলপ নীতিমালা এনেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

সচিব বলেন, যাতে করে সাশ্রয়ী মূল্যে বাংলাদেশে গাড়ি উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ইতোমধ্যে আমাদের ঢাকাস্থ জাপানী রাষ্ট্রদূত এ রকম একটি প্রস্তাব দিয়ে গেছেন, আমার সঙ্গেও কথা বলেছেন। উনারা বলেছেন, জাপানের একটি বিখ্যাত কোম্পানি, এখানেই গাড়ি তৈরী করতে চায়।

এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা হয়তো মিডিয়াতে দেখে থাকবেন, যে এরমধ্যে ১ লাখ বা ১ লাখ ১৪-১৫ হাজার টাকার মধ্যে তিন-চারজন যাওয়ার মতো ইলেকট্রিক কার উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে। এগুলো এরমধ্যে চলে আসবে।’

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভায় পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পাবলিক ট্রাসপোর্টকে আরও স্ট্রং করতে হবে। তিনি বলেন, অটোমোবাইলের যন্ত্রাংশ বা পার্টস আমরা যাতে নিজেরাই বানাতে পারি সেটাও নীতিমালায় যুক্ত করা হয়েছে ।

এদিকে, আজকের বৈঠকে ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা অর্ডিন্যান্স’৭৬ এর আওতায় চলার কারণে নতুন আইন করার প্রয়োজন ছিল এবং নির্বাচন কমিশন থেকেই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই আইনে সর্বশেষ আদম শুমারীর প্রতিবেদনে উল্লেখিত জনসংখ্যা যতদূর সম্ভব বাস্তবায়ন/ বন্টনের ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করা হবে। আর কমিশন যদি প্রয়োজন মনে করে তবে, আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার একটি প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করে সরকারী গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এবং লিখিত আপত্তি এবং পরামর্শ গ্রহণ করবে।

সচিব বলেন, দৈব দুর্বিপাক বা অন্য কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব না হলে সর্বশেষ নির্ধারিত সীমানা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
একইসঙ্গে ওআইসির ‘উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডব্লিউডিও)’ এর সদস্য পদ গ্রহণ এবং এ লক্ষ্যে ডব্লিউডিও-এর স্ট্যাটিউট স্বাক্ষর ও অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এদিনও করোনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, মিটিংয়ে ছাড়াও আলাপ হয়। ইতোমধ্যে আমরা স্থানীয় প্রশাসন বা লোকাল গভমেন্ট যারা আছেন বা আর্মড ফোর্সেস বা ‘ল’ এজেন্সিজ সবাইকে বলে দিয়েছি তারা স্থানীয়ভাবে বসে, যদি দেখেন কোনো এলাকায় করোনা সংক্রমণ বেশি হচ্ছে সেই এলাকায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া, ট্রিটমেন্ট বেশি দেওয়া বা লকডাউন, যেটা তারা প্রয়োজন মনে করবেন সেভাবে।

কারণ পুরো দেশে তো এখন একভাবে করোনা বাড়ছে না। করোনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশনা আছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসনকে কর্তৃত্ব দিয়ে দেওয়া হলো কোনো রকম ঝুঁকি না নিতে। যেখানে প্রয়োজন মনে করবেন তারা যেন সেখানে ব্লক করে দিয়ে এটাকে থামানোর চেষ্টা করেন।

মন্ত্রি পরিষদ সচিব বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা চিঠিতে সেকথা বলে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আবার সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাগিদ দিতে বলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *