চট্টগ্রাম, ২৫ মাঘ (৮ ফেব্রুয়ারি) : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, নির্বাচনে অংশ না নেওয়া বিষয়ে বিএনপি যেই ভুলটি করছে, সেটি তাদের আত্মহননের মত। এর জন্য জনগণের নিকট তাদের জবাবদিহি করতে হবে।
আজ চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন-সিইউজে কর্তৃক চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, অনেক সাংবাদিক আমাকে অনুরোধ করেছেন, মীর্জা ফখরুল সাহেবের প্রশ্নের জবাব দিতে। ফখরুল সাহেবের বক্তব্যের আমি কি জবাব দেবো। ফখরুল সাহেবের একটা গুণ আছে তিনি অবলীলায় মিথ্যা কথা বলতে পারেন। যেমন আমরা যখন বললাম ফখরুল সাহেব দেশের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন এবং দেশের সাহায্য বন্ধ করার জন্য চিঠি দিয়ে দেশদ্রোহীতামূলক কাজ করেছেন।
তারপর তিনি সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, আমি কোন চিঠি দেইনি। পরে যখন গণমাধ্যমের সামনে সেই চিঠি উপস্থাপন করলাম- এরপর তাদের কোন জবাব নেই। এভাবে একটি দলের মহাসচিব মিথ্যাচার করতে পারেন সেটি দেখে এবং শুনে আমি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে লজ্জিত বোধ করছি।
তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে সরকার সার্চ কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু উনারা তো সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছেন, কোন নির্বাচনে যাবেন না। যে রাজনৈতিক দল জনগণের রায় নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া বিশ^াস করে, সেই রাজনৈতিক দল নির্বাচন ব্যতিরেকে টিকে থাকতে পারেনা।
মন্ত্রী বলেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন। ২০১৪ সালে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের পর থেকে এখন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি ভরসার জায়গা হয়ে দাড়িয়েছে। একজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে সাংবাদিকের পরিবার ৩ লক্ষ টাকা পাচ্ছে। গতবছর প্রধানমন্ত্রী করোনাকালীন সহায়তার জন্য আরো ১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্ধ দিয়েছেন।
সেখান থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাকি টাকা করোনাকালীন সহায়তা হিসেবে বিতরণ করা হবে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট যেভাবে কাজ করছে এটি বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজের অনেকেই ধারণা করেন নাই। বিগত ২০২০ সালে যখন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে টাকা ছিল না, তখন আমি নিজে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য দপ্তরে অব্যবহৃত অর্থ সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টে দিয়ে সাংবাদিকদের সহযোগীতা করেছি।
আমি সাংবাদিকদের কাছে তথ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, দলের প্রচার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছি। আমি সাংবাদিকদের কষ্ট বুঝি। আমরা চেষ্টা করছি সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা খাতে সহায়তা করার জন্য। সেই জন্য খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সেটি প্রাথমিকভাবে ট্রাস্টের সভায় আলোচনা করেছি।
মন্ত্রী বলেন, অনেক সাংবাদিক প্রেসক্লাবের সামনে দাড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করে এবং সরকারকে গালি দেয়, পারলে তথ্যমন্ত্রীকেও গালি দেয়, প্রশ্ন ওঠেছে- তাদের সহায়তা দেব কিনা। আমি বলেছি অবশ্যই দিতে হবে।
তিনি যদি সাংবাদিক হন আর সহায়তা প্রদানে আমরা যে ক্যাটাগরি ঠিক করেছি সেটির মধ্যে তিনি পড়েন তাহলে অবশ্যই দিতে হবে। অনেক সাংবাদিক যারা করোনাকালীন সহায়তা পেয়েছেন তারা কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে লেখেন এবং বলেন। আমরা মনে করি সরকার সকলের। যিনি সমালোচনা করেন, রাষ্ট্রের সহায়তা তিনিও পাবেন। আমরা মনে করি সমালোচনা কাজ করার ক্ষেত্রে সহায়ক।
আজ ৫৪ জন গণমাধ্যম কর্মীকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ৩৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার অনুদানের চেক তুলে প্রদান করা হয়।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি সুভাষ চন্দ বাদল, সদস্য কলিম সরওয়ার, প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস , সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সাংবাদিক নেতা শহিদুল আলম বক্তব্য রাখেন।