ঢাকা, ১১ শ্রাবণ (২৬ জুলাই): ‘বিএনপি’র পরিকল্পিত লকডাউনটা কি! সেটা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে ১৫৮ দিন মানুষকে বন্দি করে রাখার মতো কি না’ লকডাউন নিয়ে বিএনপি’র লাগাতার সমালোচনার জবাবে এ প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
আজ সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তথ্যমন্ত্রীর সাথে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা লকডাউন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল সাহেবকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন, ‘লকডাউন নিয়ে বিএনপি’র পক্ষ থেকে একেক সময় একেক ধরনের কথা বলা হচ্ছে। লকডাউন দেয়ার আগে তারা বলেছিল দেশে কঠোর লকডাউন দেয়া দরকার। আবার লকডাউন দেয়ার পর বলছে এই লকডাউন অপরিকল্পিত। তাহলে তাদের পরিকল্পিতটা কি, সেটার প্রেসক্রিপসনটা তারা দিক।’
‘আর বিএনপি যে এসমস্ত কথা বলে, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে দিনের পর দিন হরতাল অবরোধ ডেকে ১৫৮ দিন মানুষকে বন্দি করে রেখেছিল, জনগণের যে অসুবিধা হয়েছে, সেটা কি তাদের মাথায় ছিল না’ প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, আজকে তো মানুষের জীবনরক্ষার জন্য লকডাউন দিতে হচ্ছে এবং শুধু বাংলাদেশে নয়, পাশ্ববর্তী দেশ ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী এসময় বলেন, বাংলাদেশে আজকে প্রায় দেড় বছর করোনা। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষের দেশে একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি। সরকার ও আমাদের দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক তৎপরতার কারণে মানুষের মধ্যে কোনো হাহাকার নেই। সাময়িক অসুবিধা যে হচ্ছে না, তা নয়। অবশ্যই অনেকের সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তবে এ অসুবিধা সাময়িক। সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তাহলে লকডাউন বিলম্বিত করতে হবে না।
মির্জা ফখরুলের ‘সরকার দিন দিন হিংস্র হয়ে উঠছে, বিএনপিকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে’ এ বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে হিংস্র তার রাজনীতি বিশেষ করে ২০১৩-১৪-১৫ সালে যেভাবে মানুষকে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে হত্যা করা, বহু মানুষকে ঝলসে দেয়া, বহু মানুষকে জীবনের তরে পঙ্গু করে দেয়া, এটি বাংলাদেশে আগে কেউ কখনো দেখেনি। পৃথিবীতেও সমসাময়িককালে রাজনীতির জন্য এভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা কেউ দেখেনি।’
‘এখন এই লকডাউনের মধ্যে যদি কেউ ফৌজদারি মামলার আসামি হন, তিনি যদি কোনো দল করেন তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না?’ প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবরা ফৌজদারি অপরাধের আসামির পক্ষ কেন নেন। কোনো রাজনীতিবিদও যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হন, আইন এবং আদালত তো তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে। আইন এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার সাথে রাজনীতির কোনো সংশ্লেষ নেই।’
এখন গ্রামাঞ্চলেও করোনা ছড়িয়েছে এ প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি মানুষের মধ্যে করোনার শুরুতে যে ধরনের ভীতি ছিল, সেই ভীতিটা নেই। দীর্ঘ একবছর গ্রামে করোনা না ছড়ানোর প্রেক্ষিতে গ্রামের মানুষের মধ্যে একটি ধারণা জন্মেছিল গ্রামে কখনো করোনা আসবে না। কিন্তু আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, শহরের হাসপাতালগুলোতে যে রোগীরা ভর্তি হচ্ছে তার ৭০ ভাগ গ্রাম থেকে আসছে।’
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আবারও অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, নিজের সুরক্ষার জন্যই লকডাউন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রয়োজন।