চট্টগ্রাম, ৭ মাঘ (২১ জানুয়ারি) : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দেশের মানুষের নিকট প্রত্যাখ্যাত হয়ে এখন বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের অপচেষ্টা করছে। তারা বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বদনাম করছে। এতে তারা দেশকে, দেশের মানুষকে হেয় করছে।
পাশাপাশি দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ধ্বংসের চেষ্টা ও দেশকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। তিনি বলেন, বিএনপির বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে সরকারের নিকট সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।
মন্ত্রী আজ চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ যখন অপরাধ করে তখন কথাবার্তায় খেই হারিয়ে ফেলে। বিএনপির সেই অবস্থা হয়েছে। তারাও খেই হারিয়ে এখন আবোল তাবোল বকছে। কদিন তারা নিশ্চুপ ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে সংসদে তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করায় এখন তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।
কেননা নয়াপল্টন অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে তারা বিদেশী লবিস্ট ফার্মের সাথে চুক্তি করেছে। তাদের অপকর্ম এখন জাতির সামনে পরিস্কার ফুটে ওঠেছে। মন্ত্রী বলেন, বিদেশি লবিস্টের পেছনে বিএনপি বিপুল অংকের অর্থ খরচ করেছে। দেশ থেকে এসব অর্থ কিভাবে গেল তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান খতিয়ে দেখবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা করার জন্য বিএনপি আমেরিকায় এজেন্ট ভাড়া করেছিলো। সে এজেন্টকে আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জিজ্ঞাাসাবাদ করা হয়েছে। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ঈসরাইলী এজেন্টের সাথে বৈঠক করেছে তা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।
তারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্যও বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছিলো। তারা দেশের সমৃদ্ধি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ করতে চায়। জনগণের ওপর বিএনপির কোন আস্থা নেই। তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। এরকম জনবিচ্ছিন্ন একটি দলের রাজনীতি করার কোন অধিকার আছে কিনা সে বিচার এদেশের জনগণ করবে।
র্যাব নিয়ে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের চিঠির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের দু’তিনটি ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠান নাম সর্বস্ব। তাদের তেমন কোন অস্তিত্ব নেই। সম্প্রতি আলোচিত চিঠি তারা দিয়েছিল আড়াই মাস পূর্বে।
কিন্তু এতদিন সামনে না এনে এখন কেন প্রকাশ করা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। এতে বুঝা যায় এটাও ষড়যন্ত্রের অংশ। এতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালতো যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায়ও বিবৃতি দিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো আমেরিকা বা ঈসরাইলী নৃশংসতা দেখতে পায় না।
সেখানে মানবাধিকার লঙ্গিত হলেও সেসব বিষয়ে তারা কোন বিবৃতি দেয় না। এসব কারনে এসব প্রতিষ্ঠানের বিশ^াসযোগ্যতা হারিয়ে গেছে।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ বিষয়ক অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংলাপে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আইন করার প্রস্তাব দিয়েছে। সরকার এ আইন করার উদ্যোগ নেওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। অথচ টিআইবি উল্টো বিবৃতি দিয়েছে যা বিএনপির বিবৃতির মতো। দেখা যাচ্ছে বিএনপির বিবৃতির সাথে টিআইবি’র বিবৃতির যথেষ্ট মিল রয়েছে। টিআইবির বিবৃতিরও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
আইপি টিভি ও ইউটিউবে সংবাদ প্রচার বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, নিউ মিডিয়ায় জমানায় এগুলো বাস্তবতা। কয়েকটি আইপি টিভি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অনুমোদনের শর্তাবলী ও সম্প্রচার নীতিমালায় আইপি টিভি ও ইউটিউবে সংবাদ প্রচার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ডিসি সম্মেলনে সে শর্তাবলী ও নীতিমালার বিষয়টি পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, অনুমোদনহীন অনেক গণামাধ্যম রিপোর্টারদের বেতন ভাতা দেয়না। এসব রিপোর্টারগণ চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত। তারা মানুষের থেকে কিভাবে টাকা কামাবে কেবল সে ফিকির করতে থাকে। ডিসি সম্মেলনে সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ওপেন প্ল্যাটফর্ম উল্লেখ করে এসব প্ল্যাটফর্মে কেউ কোন সংবাদ দিলে তা তার নিজস্ব বিষয় বলে মন্ত্রী এসময় উল্লেখ করেন।
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক মুনওয়ার রিয়াজ মুন্না, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদসহ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।