দেবহাটা প্রতিনিধি : দেবহাটার কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টানা ৫ বারের নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আছাদুল হকের নির্বাচনী সভায় আগামী ২৮ নভেম্বর ব্যালটের মাধ্যমে তাকে বিজয়ী করে দীর্ঘদিনের ঋন শোধ করার অঙ্গীকার করেছেন ভোটারসহ কুলিয়ার সকল শ্রেনী পেশার মানুষ।
শনিবার বিকেলে উপজেলার সুবর্ণাবাদ সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত আছাদুল হকের ঘোড়া প্রতিকের নির্বাচনী সভায় এ অঙ্গীকার করেন কুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা তার কর্মী-সমর্থক, দলীয় নেতাকর্মীসহ সেখানে উপস্থিত সর্বসাধারণ।
সভায় স্বতষ্ফূর্ত মানুষের অংশগ্রহনে কানায় কানায় পূর্ন হয়ে ওঠে সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠ। একপর্যায়ে নির্বাচনী সভাটি রীতিমতো জনসভায় পরিনত হয়।
এসময় দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা ও ওই ইউনিয়নের টানা ২৮ বছরের চেয়ারম্যান আছাদুল হকের বেদনায় সমব্যাথিত ও মর্মাহত হয়ে আসন্ন নির্বাচনে তাকে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার অঙ্গীকার করেন তার হাজারো ভক্তরা।
সভায় বক্তারা বলেন, আছাদুল হকের বর্তমান প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আসাদুল ইসলামের ভাই ইমাদুল ইসলামও বিগত নির্বাচনে কুলিয়ায় গার্মেন্টস নির্মান, হাসপাতাল নির্মান, বেকারদের চাকুরী দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সহ বহু আকাশচুম্বী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
কিন্তু নির্বাচনে জয়লাভের পরই তিনি বিদেশ পাড়ি দিয়ে ইউনিয়ন বাসীর সাথে প্রতারণা করেন। ফলে এবার দলীয় মনোনয়ন পেলেও আসাদুল ইসলামের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তৃনমুলের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ।
অপরদিকে দলের জন্য আজীবন কাজ করা স্বত্বেও কুলিয়ার ২৮ বছরের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আছাদুল হককে বাদ দিয়ে এবারের কুলিয়ার সেই প্রতারক পরিবারের সদস্যকে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন দিয়ে ত্যাগী ও বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ আছাদুল হকের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে ত্যাগী এ নেতার প্রতি দল অবিচার করলেও, আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আছাদুল হকের সাথে বেঈমানী করবেনা। ২৮ নভেম্বর কুলিয়ার জনগন মার্কায় নয়, আছাদুল হকের নামে ভোট দিয়ে তাকে বিজয়ীসহ তার দীর্ঘদিনের ঋন শোধ করবে বলেও সকলে অঙ্গীকারবদ্ধ হন।
এসময় আছাদুল হকের ঘোড়া প্রতিকের পক্ষে শ্লেগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সভাস্থল। সভায় বক্তৃতাকালে চেয়ারম্যান প্রার্থী আছাদুল হক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
ভোটার ও জনসাধারণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে জনগন আমার সাথে বেঈমানী করেনি। আমার প্রতিপক্ষের কালো টাকায় বিক্রি হয়ে তৎকালিন প্রশাসনের কয়েকজন এবং আমার দলের কয়েকজন চাটুকার ষড়যন্ত্র করে আমাকে পরাজিত করেছিল।
সেসময় আমার একটি ছেলেকেও ছুরিকাঘাত করে আজীবনের জন্য পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছিল প্রতিপক্ষরা। তারপরও আমি আমার জনগনকে ছেড়ে যাইনি। সবসময় আপনাদের পাশে থেকেছি, বিপদে আপদে ঢাল হয়ে দাড়িয়েছি। শেষ বয়সে মনোনয়ন নিয়ে দলের আচরনে আমার চোখ থেকে অশ্রু ঝরেছে।
তবুও আমি ভোটের জন্য আপনাদের দুয়ারে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি আমার জনগন আমাকে নিরাশ করবেনা।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যেই প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আমাকে নানাভাবে হুমকিসহ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার শুরু করেছে। তারা গায়ের জোরে ভোট কেটে ছিড়ে নেয়ারও হুমকি দিচ্ছে। জনগনই আমার শক্তি। ভোটকেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে আমার পক্ষে জনগনই ভোটকেন্দ্রে তাদের প্রতিহত করবে।