বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ভোমরায় এক ভূয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে এক লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার (৯ আগস্ট) সাতক্ষীরা আমলী আদলতে মামলাটি করেছেন সদর উপজেলার ভোমরা গ্রামের মহাশিন সরদারের ছেলে ওমর ফারুক (৩৫)।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ভোমরা শান্তিবাগ রোডে ওমর ফারুকের মালিকানাধীন ফরহাদ ট্রেডার্স নামে একটি মুদি দোকান আছে। ওমর ফারুকের ছেলে ফরহাদ ইসলাম বিভিন্ন বাজারে মালামাল বিক্রি করেন।

গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ফরহাদ ইসলাম মার্কেটিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভোমরা গাজিপাড়া এলাকায় পৌছালে একই এলাকার আরশাদ আলী ও ছেলে ভূয়া ডাক্তার আশরাফুল ইসলামসহ কয়েকজন ফরহাদকে চলন্ত ভ্যান থেকে নামিয়ে এক লক্ষ টাকায় ছিনিয়ে নেয়। এতে বাঁধা দিলে ফরহাদ ইসলামকে বেধড়ক মারপিট করে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা খবর পেয়ে ফরহাদকে উদ্ধার করে। এঘটনায় ওমর ফারুক বাদী হয়ে সোমবার আদালতে সিআর ৫৯৩/২১ (সাত:) নং মামলা করেন। আদালত শুনানী অন্তে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয় গ্রামবাসীর অভিযোগ, কোন রকম লাইসেন্স ছাড়াই আশরাফুল ইসলাম রানা ভোমরা গাজীপাড়ায় ‘তিষা চিকিৎসালয়’ নামে চেম্বার খুলে রোগি দেখছেন এবং উচ্চ মূল্যে ঔষধ বিক্রি করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের অর্থ। এলাকাবাসির পক্ষে আব্দুর রাজ্জাক, রিয়াজুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ গাজীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বিনা লাইসেন্সে আশরাফুল ইসলাম চোখ থেকে শুরু করে হাড়ের চিকিৎসা করেন।

এলাকার সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণা করে ওই ভূয়া ডাক্তার তার চেম্বারে অপারেশন পর্যন্ত করে। সরকারি হাসপাতাল ছাড়া বিষ খাওয়া রোগির ওয়াশ করানো নিষেধ থাকলেও ওই ডাক্তার তা মানেনা। গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ওই ডাক্তার কম দামের ওষুধ দিয়ে আদায় কয়েকগুন বেশি টাকা। এরআগে ওই ডাক্তার ও তার পিতা এতিমখানাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম করে গ্রামে গ্রামে গিয়ে অর্থ তুলে তা আত্মসাত করতো।

গ্রামবাসির অভিযোগ দোকানে দোকানে ফেরি করে মশার কয়েল, ব্রাশ আর চকলেট বিক্রি করা ব্যক্তি রাতারাতি কীভাবে ডাক্তার হয়েছে তা তারা জানেন না। বিষয়টি স্বাস্থ্যবিভাগ ও ওষুধ প্রশাসনকে খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এলাকবাসি।

এবিষয়ে আশরাফুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েক মাস আগে ভোমরা গাজীপাড়া গ্রামের ফারুক হোসেনের ডিলার নেওয়া একটি মশার কয়েল কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতাম।

এরপর পল্লী চিকিৎসক হিসেবে প্রাক্টিস করি। ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ওমর ফারুকের ছেলে ফরহাদ ভোমরা পশ্চিমপাড়া সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের বাড়ির সামনে আমার চেম্বারে হাজির থাকার কথা স্বীকার করলেও তাকে মারপিট ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *