সাতক্ষীরা টাইমস ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন-গৃহহীনদের মাঝে ৫৩ হাজার ৩৪০টি ঘর বিনামূল্যে বিতরণকালে মুজিববর্ষে দেশের সকল গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের সকল ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ ঘর পাবে। একটি মানুষও আর ঠিকানা বিহীন থাকবে না।
জাতির পিতা এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ একটা ঘর যখন পায়, তার মধ্যে যে আনন্দ, তার মুখে যে হাসি, এর থেকে বড় পাওয়া আর কিছু নয়। আমি মনে করি, আমার জন্য এর থেকে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না।
‘ক্ষমতা মানে ভোগ বিলাস নয়। ক্ষমতা হলো মানুষের সেবা করা। মানুষের জন্য কাজ করা,’ যোগ করেন তিনি। গত জানুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে ঘর প্রদানের পর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে এদিন আরো ৫৩ হাজার ৩৪০ পরিবারকে দুই শতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দিলেন তিনি।
রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের ৪৫৯টি উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন এসব মানুষকে ঘর দেওয়ার এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জমির দলিল ও ঘরের চাবি উপকারভোগীদের হাতে তুলে তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে আমি যেহেতু যেতে পারিনি। আমার পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, ডিসি এবং ইউএনও জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেবেন।
তিনি বলেন, মানুষের জন্যই মানুষ। মানুষের জন্য তাঁদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে পারাটাই সব থেকে বড় কথা।
‘আমাদের দেশটা দুর্যোগ প্রবণ একটি দেশ’-সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই এই ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে ঘরে-বাড়ি করে দেওয়া এবং জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার মাধ্যমে পুনর্বাসনের লক্ষ্য নিয়েই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘর-বাড়ি নির্মাণে আমরা প্রশাসনের ওপর সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী-যাদেরকেই দায়িত্ব দিয়েছি তারা অনেক আন্তরিকতার সঙ্গে সেই কাজগুলো করেছেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
দলিলে জমির মালিকানা স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে করে দেয়া হয়েছে। তাদের নামে স্থায়ী দলিলের পাশাপাশি নামজারি করে খাজনা দাখিলাও দেয়া হয়েছে। সেমিপাকা ঘরে আছে দুটি রুম, একটি বড় বারান্দা, রান্নাঘর ও টয়লেট। পাশাপাশি সুপেয় পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও আছে। প্রকল্প এলাকায় বিদ্যালয়, খেলার মাঠ এবং মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনালয় ও রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে দারিদ্র মুক্ত করায় তার সরকারের লক্ষ্য পূরণে সবথেকে বেশি যে জিনিসটির দরকার সেটি হচ্ছে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোড়গোঁড়ায় পৌঁছে দেওয়া।
জাতির পিতা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ১০ শয্যার হাসপাতাল তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করে শুরু করেছিলেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, তার সরকার পরবর্তীতে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা সাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছে। বর্তমানে ৩০ প্রকারের ওষুধও বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে সেখান থেকে। পাশাপাশি, মাতৃত্বকালীন সেবা, মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান ল্যাকটেটিং মাদারকে ভাতার আওতায় নিয়ে আসা এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হারও তার সরকার কমাতে পেরেছে।