এক করোনার কত রূপ। কেউ ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়ে হাসিমুখে ঘুরছেন ফিরছেন, কেউ ছুটছেন আইসিইউ বেডের সন্ধানে। কেউ দুদিনের মাথায় দিব্যি সুস্থ হয়ে আবার মিশে যাচ্ছেন জনমানুষের জোয়ারে।
অন্যদিকে, সুস্থ হয়ে ফেরা অনেকের অবসন্নতা ও ক্লান্তি যেন কাটছেই না। এর মধ্যে লং কোভিড তথা দীর্ঘমেয়াদে করোনাভাইরাসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও ভুগছেন অনেকে। অসুস্থতা শুরুর পর ১২ সপ্তাহ তথা তিন মাসেও যাদের সমস্যা যাচ্ছে না, তারাই লং কোভিডে আক্রান্ত। কী কী সমস্যা হতে পারে, চলুন জেনে নেওয়া যাক –
ক্লান্তি:
আগে যারা বেশি হাঁটাহাঁটি বা পরিশ্রমের কাজ করতে পারতেন তাদের অনেকেই কোভিডে ভোগার পর জানিয়েছেন, আগে এক ঘণ্টা হাঁটতে পারলেও এখন ৫ মিনিটেই হাঁপিয়ে যান। এ ছাড়া সিঁড়ি ভাঙতেও কষ্ট হচ্ছে ঢের। বিশেষ করে ঘুম ঘুম ভাবটা কিছুতেই কাটছে না।
মনযোগে ঘাটতি:
লং কোভিডের আরেক মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ব্রেইন ফগ তথা মগজে ধূসর অনুভূতি। কোনও কাজে মনযোগ দেওয়া বা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে আগের চেয়ে বেশি ভাবতে হচ্ছে তাদের।
শ্বাসে সমস্যা:
হঠাৎ হঠাৎ শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সিরিয়াস ধরনটির নাম অ্যাপনিয়া হলেও লং কোভিড রোগীদের বেশি দেখা দিচ্ছে ডিসপেনিয়া। এটা অত মারাত্মক না হলেও হুটহাট শ্বাস নিয়ে সমস্যায় পড়ে যান রোগী।
বুকে তীব্র ব্যথা:
লং কোভিডে আক্রান্তদের বুকে মাঝে মাঝে তীক্ষ্ম একটা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। অনেকেই এটাকে বুকে ছুরি বিঁধে যাওয়ার সঙ্গেও তুলনা করেছেন।
অনিদ্রা:
এসব নানা ধরনের ঝামেলা নিয়ে কি আর ভালো ঘুম হবে? তবে আগে যাদের ঘুম নিয়ে টেনশন ছিল না, কোভিডের পর তাদের অনেকেই সরাসরি পড়েছেন ইনসমনিয়ায় খপ্পরে।
অদ্ভুত শারীরিক অস্বস্তি:
অনেকদিন ঘরে যারা করোনাভাইরাস সংক্রমণে ভুগছেন তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক তীক্ষ ব্যথা কিংবা শিহরণ অনুভূত হতে পারে। এই অনুভূতি কয়েকদিন থেকে সেরে যায়, আবার নতুন করে ফিরে আসে।
হাড়ের জোড়ে অস্বস্তি:
অবসাদগ্রস্ত অনুভব করার পেছনে একটি বড় কারণ হতে পারে হাড়ের জোড়ে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি।
জ্বর ও কাশি: কোভিড-১৯’য়ের অন্যতম উপসর্গ জ্বর ও কাশি। কাশির সঙ্গে শুকনো কফ দেখা দিতে পারে। জ্বর সেরে গিয়েও বারবার ফিরে আসতে পারে।
ডায়রিয়া:
এবারের করোনায় আগের চেয়ে ডায়রিয়ার লক্ষণওয়ালা রোগীও নাকি বেশি পাচ্ছেন ডাক্তাররা। তথাপি, কোভিড থেকে সেরে উঠলেও দীর্ঘমেয়াদে ডায়রিয়া সারছে না অনেকেরই।
স্বাদ-গন্ধ গায়েব:
এবার এ ধরনের রোগীও বেড়েছে। গন্ধ যতই তীব্র হোক না কেন, অনেকেই সুস্থ হওয়ার ৩ সপ্তাহ পরও মুখে খাবারের স্বাদ বা গন্ধ কিছুই পাচ্ছেন না।
……………………………………………………………………………..
ডা. সুব্রত ঘোষ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ।