1. altafbabu1@gmail.com : news :
  2. altafbabu1@gmail.com : Satkhira Times : Satkhira Times
October 2, 2023, 12:03 am

শ্যামনগরে শ্বশুরবাড়ির রান্নাঘর থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার : পরিবারের দাবী হত্যা!

  • আপডেট সময় Thursday, April 21, 2022

বিশেষ প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ীর গাঙআটি গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পরিত্যক্ত রান্না ঘরের ভিতর থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকালে শ্যামনগর থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) শাহাবুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।

নিহত জামাইয়ের নাম আসাদুজ্জামান তাছের (২৫)। তিনি একই এলাকার জয়নগর গ্রামের নুর হোসেন গাজীর ছেলে।
নিহতের স্ত্রী গাঙআটি গ্রামের মৃত সুরাত আলী সরদারের মেয়ে মারুফা খাতুন (২৩) জানান, নিজেদের মধ্যে সাংসারিক ঝামেলার দ্বন্দ্বের জেরে গত ৪মাস আগে তার স্বামী তাকে মৌখিকভাবে তালাক দেয়। এরপরে গত সপ্তাহে তিনি নিজেই তাকে তালাকনামা পাঠিয়েছিলেন। আর বৃহস্পতিবার সকালে পার্শ্ববর্তী তার বড় বোনের রান্না ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে বলে বড় বোন তাকে খবর দেয়।

নিহত আসাদুজ্জামান তাছেরের বড় শালিকা ছকিনা খাতুন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সূর্য ওঠার সময় আমি আমার পরিত্যক্ত রান্না ঘরটি গোছাতে গেলে ঘরের মধ্যে একজনকে ঝুলে থাকতে দেখে ডাকচিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে গেছে।

নিহতের বোন খাদিজা ও নিহতের মামী রহিমা খাতুন জানান, আসাদুজ্জামান তাছেরকে স্বামী পরিত্যক্তা গর্ভবতী নারী মারুফা বেগমের সাথে জোর করে বিয়ে দেয়। এরপর থেকে তারা আসাদুজ্জামান তাছেরকে বিভিন্ন সময়ে মারপিটসহ নানানভাবে শারিরীক নির্যাতন করতো। ওরা তাছেরকে মেরে ফেলেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইসহাক আলী জানান, ওরা (শ্বশুরবাড়ির লোকজন) আসাদুজ্জামান তাছেরকে প্রায় সময় মারপিট করতো। লাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এটা হত্যা! কারণ আত্মহত্যা ঘটার মতো কোন নমুনা লাশের দেহে নেই।

নিহতের পিতা নুর হোসেন গাজী জানান, গত কয়েক দিন আগে আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারপিট করে তার ফোন ও টাকা পয়সা কেড়ে নিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে বুধবার (২০ এপ্রিল) সেই ফোন আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। বৃহস্পতিবার শুনতে পাচ্ছি যে আমার ছেলে নাকি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার ছেলেকে ওরা জোর করে ওখানে এক থেকে দেড় বছর আগে বিয়ে দিয়েছিল। আমার ছেলেকে ওরা হত্যা করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। কারণ আমার ছেলের পা দুটি মাটি স্পর্শ করেছিল।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসাদুজ্জামান তাছেরের মরদেহ যেভাবে ঝুলছিল তাতে মনে হয় তাকে অন্য কোথাও হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়। কেননা, মরদেহটি হাঁটুগাড়া অবস্থায় ছিল। তার চোখ বন্ধ ছিল। জিহ্বা বের হয়নি। ঠোঁট স্বাভাবিক ছিল। হাত মুষ্টিবদ্ধ।

মরদেহ যেখানে ঝুলছিল ঠিক তার নিচে খেজুরপাতার পাটি থাকলেও তা অবিকৃত ছিল। তার মানে হলো, আত্মহত্যার সময় তাছের ছটফট করলে পায়ের দাপাদাপিতে ওই পাটি ছিড়ে যাবে অথবা দলাপাকিয়ে যাবার কথা। কিন্তু সেটা হয়নি। তাই প্রাথমিকভাবে এটি হত্যা বলে প্রতীয়মান হয়।

শ্যামনগর থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, খবর পেয়ে মরদেহটির সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। মরদেহটির ময়না তদন্তের জন্যে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি আসাদুজ্জামান তাছেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 satkhiratimes24.com
Theme Customized By BreakingNews