মেহেদী হাসান শিমুল : ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুসপুকুর এলাকার জামায়াতের কর্মী হাবিবুর রহমান হবির বাড়ি ঘর লুটপাট ও ভাংচুর করে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যার অভিযোগে সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির ও সাবেক এ এস পি কাজী মনিরুজ্জামান ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সহ ৩৮ জনের নামে নিহতের পিতা আকবর আলি বাদী হয়ে বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আমলী ০১ নং আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
সাতক্ষীরা আমলী আদালত ০১ এর বিচারক নয়ন বড়াল বাদীর লিখিত অভিযোগ আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ০১ নং আদালতের বেঞ্চ সহকারী আঃ সালাম।
মামলার আসামীরা হলেন, , সাতক্ষীরার সাবেক পুলিশ সুপার ও সদ্য বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা চৌধুরি মঞ্জুরুল কবির, সাবেক এএস সি (সদর সার্কেল) কাজী মনিরুজ্জামান, সদর থানার তৎকালিন অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক, এস আই হেকমত আলী, এস আই শরিফ মিয়াজী, কুচপুকুর গ্রামের মৃত নেছার আলীর পুত্র রফিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, মৃত নজরুল ইসলামের পুত্র রনি, জনি, মৃত কালু কাহারের পুত্র নাজের আলী, কওছার আলীর পুত্র শিমুল, শাহিন, কওছারের স্ত্রী রাশিদা বেগম, মৃত আফতাব আলীর পুত্র কওছার আলী, ইসমাইল সরদারের পুত্র সাইফুল ইসলাম, রবিউল ইসলামের পুত্র সবুজ, নাজের আলীর পুত্র রাজু, হামজার আলী, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের পুত্র আনারুল ইসলাম,
মৃত নুরালী মোড়লের পুত্র রবিউল ইসলাম, অজিহার মল্লিকের পুত্র মাজারুল ইসলাম বাবু, মামুন বাবুল, মৃত আহম্মদ সরদারের পুত্র আ: গফফার, হাফিজুল ইসলামের পুত্র হাবিবুর রহমান, নূরুল ইসলামের পুত্র মোশারফ হোসেন, বকচরা গ্রামের দলিলুদ্দীন সরদারের পুত্র মিজানুর রহমান, বলাডাঙ্গা গ্রামের ছেয়ামুদ্দীন সানার পুত্র সুমন মেম্বর, থোনা গ্রামের ফেরাজতুল্লাহ গাজীর পুত্র মোশারফ চেয়ারম্যান, কামার বায়সা গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র রাসেল, দেবনগর গ্রামের মৃত নেছার আলীর পুত্র মুনছুর আলী, ইটাগাছা গ্রামের মৃত আকরাম মোড়লের পুত্র আবুল কালাম, মাহমুদপুর গ্রামের আকরামের পুত্র কামরুল ইসলাম, কলারোয়ার বহুড়া গ্রামের অজিয়ার রহমানের পুত্র আমিরুল ইসলাম, কাশেমপুর গ্রামের নজরুল গাজীর পুত্র আলাউদ্দিন, সিদ্দিক দালালের পুত্র ইমরান হোসেন সোহাগ, লিয়াকাত কাহারের পুত্র সেলিম কাহার এবং বাকসা গ্রামের হাকিম ডাক্তারের পুত্র আলমগীর কবির।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালিন পুলিশ সুপার চৌধুরি মঞ্জুরুল কবিরের নির্দেশে জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান হবি কে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় অন্যান্য আসামীরা। পরের সকালে কদমতলা বাজারের একটি পুকুরের পাশে পাশে তার লাশ পাওয়া যায়। তার বুকে এবং মাথায় একাধিক গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
কতিপয় ব্যক্তি দ্রুত লাশটি দাফন করার জন্য তার পিতাকে চাপপ্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে তার পিতা দ্রুত দাফন সম্পন্ন করেন। এর আগে হবির বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ি ঘর লুটপাট করে। বাড়িতে থাকা ৪লক্ষ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা। সে সময় অনুকুল পরিবেশ না থাকায় মামলা করতে সাহস পায়নি। তবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় নিহতের পিতা আকবর আলী বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা দায়ে করেন।