শেখ আরিফুল ইসলাম আশা : বেতনা ও মরিচ্চাপ অববাহিকার ৪৭টি গ্রামের ৮ হাজার পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে আছে গত ৩ মাস যাবত।
প্রায় তিন দশক ধরে এই অ লের ২০ লাখ মানুষ একই সমস্যায় ভুগছেন এমনটি উল্লেখ করে বেতনা তীরের বিস্তীর্ন জলাবদ্ধ জমিতে দাড়িয়ে ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা পানিতে ডুবছি। আমাদের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বাড়িঘর ধ্বসে পড়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সুপেয় পানির অভাবে নানা ধরনের পীড়ার সাথে আক্রান্ত হয়েছি চর্মরোগে। এই দুরবস্থা থেকে আমাদের রক্ষা করুন বলে জোর দাবি তোলেন তারা।
বুধবার দুপুরে বেতনা তীরের বেড়াডাঙ্গি এলাকার জলাবদ্ধ হাটুপানিতে দাঁড়িয়ে এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা তুলে ধরে আরও বলেন, আমাদের এলাকা কর্মহীন হয়ে পড়ায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। নারীরা সংসারের দায়ভার নিয়ে অচল অবস্থায় পড়েছেন। পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, পানি অপসারনের কোন পথ নেই।
ফসল শেষ হওয়ার সাথে সাথে ছোট ছোট মাছের ঘেরগুলিও তলিয়ে গেছে। গবাদিপশু, হাসমুরগি পালনও বন্ধ হয়ে গেছে। বেতনা নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে পড়ায় এ বছরে প্রয়োজনের তুলনায় ৭০০ মিলিমিটার গড় বৃষ্টিপাত কম হলেও জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাতক্ষীরার বেসরকারি সংস্থা উত্তরন পরিচালিত পানি কমিটির সদর উপজেলার সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলাম, মনিরামপুরের এ্যাড. কামরুজ্জামান, সাংবাদিক কল্যান ব্যানার্জী, কুলোটি ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র, পায়রা ইউপি চেয়ারম্যান বিষ্ণুপদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর জাকির হোসেন, পাইকগাছার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল রাজ্জাক মৌলঙ্গি, সেলিম আক্তার স্বপন, অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী প্রমুখ।
বেড়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ময়দানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, জরুরী ভিত্তিতে এ অ লের মানুষের হাতে নগদ অর্থ পৌছে দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা দরকার। একইসাথে সেচপাম্প বসিয়ে পানি অপসারনের ব্যবস্থা নিতে হবে। অপরদিকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসাবে বেতনা ও মরিচ্চাপ খনন করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান বাবু।