১০ ডিসেম্বর ২০২১ সাতক্ষীরাতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে। বৈষম্য ঘুচাও, সাম্য সৃষ্টি ও মানবাধিকার সুরক্ষা’র দাবীকে সামনে রেখে সাতক্ষীরাতে ১০ ডিসেম্বর ২১ শুক্রবার সকাল ৯.৩০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে জেবিভিআইই নেটওয়ার্ক, সিএসও এইচআরডি কোয়ালিশন, সাতক্ষীরা, এইচআরডিএফ, স্বদেশ, সুশীলন, বরষা,সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, সুনাম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, সাতক্ষীরা জেলা শাখা, ক্রীসেন্ট, প্দমলোক কেন্দ্র, প্রথমআলো বন্ধুসভা, প্রেরনা সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন র‌্যালী,মানববন্ধন ও পথসভার আয়োজন করে।

মানবাধিকার কর্মি মাধব চন্দ্র দত্ত এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ওয়াল্ড ভিশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রতিভা বিকাশ সরকার, জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মোঃ আনিসুর রহমান,সুশীলনের সহকারী পরিচালক জিএম মনিরুজ্জামান, প্রতিবন্ধি কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল কালাম, ভুমিহীন নেতা আঃ ছাত্তার, মহিলা পরিষদের সাধারন সম্পাদক জ্যোৎন্সা দত্ত, বরসার সহকারি পরিচালক নাজমুল আলম মুন্না, ডাঃ ওমর ফারুক গোলাম হোসেন প্রমুখ।

দিবসের দাবীনামা উপস্থাপন করেন সুনামের যুব প্রতিনিধি ফেরদৌস আলম। মানববন্ধন ও পথসভায় উন্নয়ন সংস্থা স্বদেশ’র পক্ষথেকে সাতক্ষীরা জেলাতে জানুয়ারী ২০২১ থেকে নভেম্বর ২০২১ মাস পর্যন্ত সংঘঠিত নারী নির্যাতন সহ বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনার ২৩৩টি পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।

এসময় বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস জাতিসংঘের নির্দেশনায় বিশ্বের সকল দেশে প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর পালিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১০ ডিসেম্বর ১৯৪৮ সাল থেকে দিবসটি উদযাপন করা হয়। সার্বজনীন মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সাম্য, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিত করার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে মানবাধিকার।

মানবাধিকার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সম্ভব একটি ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজগঠন যা সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের অধিকার সংরক্ষন করবে। এই অধিকার বলতে আমরা বোঝাতে চাই বেঁেচ থাকার অধিকার, খাদ্য অধিকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার, শান্তি ও সাম্যের অধিকার, গনতন্ত্র ও সুশাসনের অধিকার, মান ও সম্মানের অধিকার, নারী অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার, সু-সম বণ্টন এর অধিকার এবং সার্বিকভাবে সম অধিকার ভিত্তিক একটি সমাজে শান্তিময় জীবন যাপনের অধিকার।

মানবাধিকার সার্বজনীন ঘোষণাপত্র অনুযায়ী মানব পরিবারের সকল সদস্যের সমান ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারসমূহ এবং সহজাত মর্যাদার স্বীকৃতিই হচ্ছে বিশে^ শান্তি, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার ভিত্তি। বাংলাদেশে সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা আছে প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে। মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে। এখানেই প্রশ্ন আমাদের বিবেকের কাছে আমরা কি পেরেছি আমাদের প্রান প্রিয় বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ? আমরা কি পেরেছি আমাদের সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে ?

দিবসের সুপারিশ: শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মৌলিক মানবাধিকার হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে;শিক্ষাখাতে জনসাধারণের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষাখাতের বেসরকারিকরণ বন্ধ করতে হবে; সমাজের অন্যান্য নাগরিকদের তুলনায় যেসব নাগরিক তাঁদের ধর্ম বিশ্বাসের কারণে সংখ্যালঘু, তাঁদের জানমালের সুরক্ষা দিতে হবে এবং তাঁদের ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে তাঁদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে বিশেষ আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে;

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে দ্রুততার সঙ্গে বিচার করে অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে এবং গণমাধ্যমকে সর্বস্তরে নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করাসহ সীমান্ত রক্ষীদের নারী ও শিশুপাচার রোধে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং কমিউনিটি ওয়াচ গ্রুপ তৈরী করতে হবে; ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সম্পদের অধিকার এবং ভূমির অধিকার নিশ্চিত করা; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে একটি স্বাধীন ও দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *