স্টাফ রিপোর্টার : সাতক্ষীরায় প্রায় ৩শ বিঘা মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে বরবটির আবাদ/ চাষ করে কোন ফুল ও ফসল  না আসাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। বীজ রোপনের দুই থেকে আড়াই মাস যাবত এসব বরবটি গাছ পরিচর্যা করে আসছেন কৃষকরা। কিন্তু গাছে ফসল না আসাই কৃষকের এখন মাথায় হাত।

সূত্রে জানাগেছে, সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড় বাজার মুসলিম বীজ ভান্ডার থেকে লাল-তীর ১০৭০ উরশি জাতের বরবটির বীজ ক্রয় করে শহরের রইচপুর গ্রামের মৃত অজেদ আলরি ছেলে কৃষক আলমগীর হোসেন ও মহিবুল্লাহ, মৃত আনারুল সরদারের ছেলে সোলাইমান, মনির সরদারের ছেলে ইসরাফিল, মৃত ইমান আলীর ছেলে আব্দুল মাজেদসহ ৩০ জন কৃষক বিশর বিলে প্রায় ৩শ বিঘা মৎস্য ঘেরের ভেঁড়িতে বরবটির আবাদ/ চাষ করেছেন।

বীজ রোপনের ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে গাছে ফুল ফোটে তাতে ফসল হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে কৃষকরা বীজ রোপন করে দুই মাস অপেক্ষা করেও কোন ফসল উৎপাদন না হওয়ায় সবজি চাষীরা এসব বরবটির গাছ কেটে ফেলে দিচ্ছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ সবজি চাষী আলমগীর হোসেন জানান, সুলতানপুর বড় বাজার মুসলিম বীজ ভান্ডার আকতার হোসেনের দোকান থেকে ১৮০০ কেজি দরে লাল তীর ১০৭০ উরশি জাতের বরবটির বীজ ক্রয় করে ৭বিঘা জমিতে চাষ করেছি।

মৎস্য ঘেরের ভেঁড়িতে বাঁশ-খুটি, কটসুতা দিয়ে মাচা তৈরী করে তাতে সার-কিটনাশক দিয়ে ও শ্রমিক খাটিয়ে এবং নিজে পরিচর্যা করে ইতিমধ্যে প্রায় ৫০হাজার টাকা খরচ করেছি। ক্ষেত থেকে ৪০/৪৫ দিনের মাথায় ২দিন পর পর দুই থেকে আড়াই মন করে বরবটির সফল তুলে বাজারে বিক্রি করতে পারি। কিন্তু এবছর গাছে ফুল-ফল কিছুই আসেনি।

সবজি চাষী সোলাইমান হোসেন জানান, ১১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে মৎস্য চাষের পাশাপাশি ঘেরের ভেড়িবাঁধে আমি ঢেড়স, সসা, খিরাই, বরবটি, সিম, মিস্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করি। চলতি বছরে ২ হাজার ৭শ টাকা খরচ করে দেড় কেজি লাল-তীর ১০৭০ উরশি জাতের বরবটির বীজ ক্রয় করে জমিতে রোপন করেছি।

বীজ রোপন করার পর থেকে গাছে ফুল না আসায় সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কৃষিবীদ রঘুজিৎ গুহুর’র কাছে পরামর্শ নিয়ে ৩/৪ বার বরবটি গাছের আগাকেটে দিয়েও গাছে ফুল আসার জন্য অপেক্ষা করেছি। কিন্তু গাছে ফসল না হওয়ায় গাছের গোড়া কেটে ফেলে দিচ্ছি।

কৃষক ইসরাফিল জানান, চলতি বছরে আমি ১২ বিঘা জমিতে বরবটির বীজ রোপন করেছি। এতোদিন গাছ পরিচর্যা করতে আমার ৭০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু গাছে কোন ফসল না হওয়ায় এবছর আমার মাথায় হাত উঠেগেছে। যে দোকান থেকে বীজ ক্রয় করেছিলাম তাকে বিষয়টি বলেছি।

দোকানদার বীজ উৎপাদন কারী কোম্পনীর সাথে না কি যোগাযোগ করেছেন। আমরা যে সব কৃষক ক্ষতিগ্রস্থের মধ্যে পড়েছি তাদের ক্ষতি পূরনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

এব্যাপারে, পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু জানান, সম্প্রতি অতিবৃষ্টির ফলে সাতক্ষীরা পৌরসভা সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ পানিবন্দি। এবং মৎস্যঘের ঢুবে ও সবজীর ক্ষেত নষ্ট হয়ে কৃষকরা এক প্রকার দিশেহারা।

রইচপুর গ্রামের ২০/৩০ জন কৃষক সুলতানপুর বড় বাজার মুসলিম বীজ ভান্ডার আকতার হোসেনের দোকান থেকে বীজ কিনে রোপন করেছে। কিন্তু তাদের কোন ফসল না হওয়ায় বিষয়টি ওই বীজ ব্যবসায়ীকে আমি জানিয়েছি। তিনি এ বিষয়ে কোন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন। এবং তিনি কৃষকদের সাথে বসে তাদের সমস্যােমেটাতে চেয়েছেন।

 

কোন ফুল ও ফসল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *