সাতক্ষীরায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ও মামলা করার কারনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা চেষ্টার মামলায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা। সাতক্ষীরা সদর থানার মামলা নং-৫৭ (তারিখ-১৯.০৬.২০২১ জি আর ৪২৪/২১)। মঙ্গলবার মামলার বিষয়ে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শামসুল হক শামস্ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মামলা সুত্রে জানাগেছে, গত ১৪ ই জুন বিকাল ৪.৩০ মিনিটে সাতক্ষীরা মুনজিতপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মাজেদ মাষ্টারের পুত্র সাংবাদিক রাউফুজ্জামান ও সঙ্গী একই গ্রামের মুনছুর আলীর পুত্র আব্দুল হামিদ কে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে জমিজমার বিষয় ধুলিহর ভূমি অফিসে যাওয়ার প্রাক্কালে পথিমধ্যে ব্রক্ষরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পার্শ্বের রাস্তায় বাজার সংলগ্ন পালপাড়ার সামনে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী ধারালো দা, চাপাতি, কোপা, চাইনিজ কুড়াল লোহার রড, হাতুড়ি ও জিআই পাইপ দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
দহাকুলা গ্রামের তাজেল উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে কোপা মাসুদ, আব্দুস সোবহানের ছেলে সেলিম, ওমরা পাড়া গ্রামের ইব্রাহিম মোড়লের ছেলে রিপন মোড়ল, সোলায়মান হাজীর ছেলে মেহেদী হাসান, দহাকুলা পূর্ব পাড়ার জিয়ারুল ইসলামের ছেলে ফাহিম, আজিম উদ্দিন সরদারের ছেলে আমিনুর, লবনগোলা গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম, চেলার ডাঙ্গা গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে ইশার আলী, বড় দামার পোতা গ্রামের আব্দুল খালেক মজলিসের ছেলে কামরুজ্জামান, তৌহিদুজ্জামান ও হাফিজুল, লবণ গোলা গ্রামের ছাকার উদ্দিনের ছেলে আজিবর, বড়দল গ্রামের ইসলাম কারিগরের ছেলে ফজলুর রহমান ও একই গ্রামের নওশের আলীর ছেলে মাহমুদ হাসান সহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জন আক্রমণ করে হাঁড়কাটা রক্তাক্ত জখম করে।
আহত অবস্থায় ৯৯৯ এ কল করলে সাতক্ষীরা সদর থানার এ এস আই আজিম তাদেরকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তারা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২০০৬ সালে এ সন্ত্রাসী চক্র সর্ব কাশেমপুর গ্রামের পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখল করতে গেলে বাদীর মেঝ ভাই রাফেউজ্জামান বাধা দিলে বাদীর সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা আদালতে জিআর ২৮/২০০৬ মামলাটি বিচারাধীন। ওই মামলায় রাউফুজ্জামান ১নং প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী হওয়ায় তাকে হত্যা করার জন্যে হত্যা মামলার আসামীরা, তাদের দলীয় লোকজন এবং বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে দীর্ঘ দিন ধরে রাউফুজ্জামান ও তার পরিবারের সদস্যদের কে হত্যার ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও পরিকল্পনা করে আসছে।
তারই ধারাবাহিকতায় কিছুদিন পূর্বে ব্রক্ষরাজপুর বাদীদের মৎস্য ঘেরে রাউফুজ্জামানকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘের লুট করতে গেলে অবস্থানরতদেরকে মারপিট করে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম করে সন্ত্রাসীরা। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা হয়। জি আর নম্বর ২৭২/২১।
সন্ত্রাসী চক্রটি করোনা কে পুঁজি করে আদালতে জামীনে মুক্তি পেয়ে আবারও পূর্ব পরিকল্পিত মাফিক হত্যার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এই সন্ত্রাসী চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে গেছে একটি অসহায় মুক্তিযাদ্ধা পরিবার।
এ বিষয়ে আহত সাংবাদিক রাউফুজ্জামান বলেন, আমার ভাইকে আমার সামনে হত্যা করার পর থেকে ভাই হত্যা মামলার আসামিরা তাদের দলীয় লোকজন এবং তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা অনেকবার আমার ওপর হামলা করে।
আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমন করে হত্যার চেষ্টা করে এবং বিভিন্নভাবে আমার জানমালের ক্ষতি করে যাচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা আমাকে হেফাজত করেছে। আমি ও আমার পরিবার মারাত্নকভাবে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগিতেছি।আমি মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয় ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে আমাকে হত্যার চেষ্টাকারী, পরিকল্পনাকারী এবং এ সকল আসামীদের প্রশ্রয়দাতাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্ট্রান্তমুলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি তদন্ত বাবুল আক্তার এর কাছে আসামি আটকের বিষয়ে জানতে চাইল তিনি বলেন, আসামী দ্রুত ধরার প্রচেষ্টা চলছে। সাতক্ষীরা সদর সার্কেল এসপি শামসুল হক শামস্ এ প্রতিবেদককে জানান, মামলা হয়েছে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।