রাহাত রাজা : লকডাউনে সারা বিশ্ব যখন স্তব্ধ, মানুষ ঘর বন্দী। হাজার হাজার মানুষ হারাচ্ছে চাকরি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যখন মাসের পর মাস বন্ধ তখন এক ভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা সদরের ব্যবসায়ী মো: হাবিব আহসান । সাতক্ষীরা পলাশপোল মোড়ে ব্যাগপ্যাক ও প্রেসিডেন্ট গ্যালারী নামে দুটি শোরুম রয়েছে তার। যেখানে উন্নত মানের হ্যান্ড ব্যাগ বিক্রয় করা হয়। ১০ বছর যাবত সাফল্যের সাথে ব্যবসা করে আসছেন তিনি। ১৫ জন কর্মচারী দিয়ে তার শোরুম দুটি ভালই চলছিলো।
তবে মহামারী করোনা ভাইরাস সব কিছু এলোমেলো করেদিয়েছে। করোনা কালে তার প্রতিষ্ঠানে বেচাকেনা নেই বল্লেই চলে দোকানের কর্মচারীদের বেতন না দিতে পেরে চিন্তায় পড়ে যান। তখনই সিদ্ধান্ত নেন ৫ বছর আগে ফেলে আসা গরুর খামারটা আবার শুরু করা যায় কিনা। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ দোকানের সকল কর্মচারী থেকে শুরু করে ম্যানেজার সবাইকে নিয়ে শুরু করলেন খামার।
সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিয়ে ৬টি গরু ক্রয় করে খমার শুরু করলেও এখন হাবিব আহসানের খামারের মূল ধণ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। হাবিব আসান বলেন ৫ বছর আগেই খমার তৈরি করে গরু পালন শরু করি কিন্তু তখন ভারতীয় গরু প্রবেশ করায় দেশী গরুর দাম কমেযায় ফলে অনেক টাকা লোকশান হয়েছিলো তায় খামার টি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। লকডাউনে আবার খামারটি শুরু করেছি। দোকানের সব কর্মচারীই এখন খামারে কাজ করছে। গরুর গোসল করানো খাওয়ানো গোয়াল পরিষ্কার করা সব কিছুই তারা করছে আমি নিজেও করছি।
হাবিব আহসানের ম্যানেজার ইয়াসিন আরফাত বলেন কোন কাজকে ছোট মনে করা উচিত নয়। আগে ম্যানেজারি করেছি এখন গোয়ালে কাজ করছি গরুর খামারের সব কাজ শিখেগেছি। বসে থাকলে খারাপ লাগে কিন্তু কিছুত করতে পারছি। তাছাড়া অনেক দোকানের কর্মচারীরা চাকরি হারিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে কিন্তু আমাদের বস হাবিব আহসান দোকান বন্ধ থাকলেও খামার করে কিছু টাকা হলেও বেতন দিচ্ছে তাতে আমরা খুশি।
হাবিব আহসান বলেন তার খামারে সব দেশি গরু পালন করা হয় কারন সারা বছর দেশি গরুর চাহিদা থাকে এবং ভালো দামে বিক্রয় করা যায়। তার তিনটি খামারে এখন ৫০টি ষাড় রয়েছে।
যেগুলো বিভিন্ন খামার ও হাট থেকে ক্রয়করে ২ থেকে ৩ মাস নিজিস্ব জমিতে চাষকৃত ঘাষ কুড়া লতাপাত ও দানাদার খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করে বিক্রয় করা হয়। কোন প্রকার রাসায়নিক খাবার দিয়ে গরু মোটা তাজা করা হয়না। এতে করে গরু প্রতি ৫ হাজার থেকে ১৫ বা ২০ হাজারের ও বেশি লাভ করা সম্ভব।
হাবিব আহসান জানান লকডাউনে তার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে অনেক লোকশান গুনতে হয়েছে কোন প্রণোদনা না পেলেও বসে থাকার প্রাত্র আমি নই।
লকডাউন উঠেগেলে যদি শোরুম দুটি আবার চালু করতে পারি এখানের কর্মচারীরাই আবার দোকানে ফিরে যাবে তায় বলে খামারটি বন্ধ করবো না। বুঝে শুনে গরুর খামার করতে পারলে বেশ লাভবান হওয়া সম্ভব। বিশেষ করে গরু ক্রয় করার সময় সুস্থ সবল গরু ক্রয়করতে হবে তাহলে পালন করে ভালো লাভ করা সম্ভব। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে তিনি লাইফ ওয়েট মেশিন ক্রয়করেছেণ যেন ক্রেতারা সহজে ওজন দেখে গরু ক্রয় করতে পারে।
হাবিব আহসানের খামার নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন দেশি গরুর একটি বিশাল খামার করতে চান যেখানে গরুর সকল খাদ্য খামারেই উৎপাদিত হবে । এবং অনেক বেকার ছেলেদের কর্মসংস্থানের সৃষ্ঠি হবে। হাবিব আহসানের ফোন নম্বর ০১৭১৭২১১৯৫৩