অনলাইন ডেস্ক : মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা ধরে রাখল বাংলাদেশ। অনেক সুযোগ হাতছাড়ার ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছেন মারিয়া মান্ডারা। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অপরাজিত থেকে শিরোপা ঘরে রাখল গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। বিজয়ের মাসে জয় নির্ধারণী গোলটি করেছেন আনাই মোগিনি।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। একই টুর্নামেন্ট এবার হল অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ নামে।
আক্রমণ, বল দখল, পাস, রক্ষণ সবকিছুতেই এদিন নৈপুণ্য দেখিয়েছে স্বাগতিকরা। দুবার গোল বাতিল না হলে ফাইনালে লাল-সবুজ জার্সির স্কোরলাইন আরও বড় হতে পারত।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে প্রথম পাঁচ মিনিটে বল দখলে এগিয়ে ছিল ভারত। এরপর থেকেই মাঠে রাজত্ব শুরু স্বাগতিকদের। ১৩ মিনিটে বাংলাদেশ ডাগআউটে প্রথম আক্ষেপ। ডি-বক্সের বাইরে থেকে মারিয়ার বাড়ানো বল দারুণ হেডে লক্ষ্য রাখেন তহুরা।
ভারত গোলরক্ষক আনিষ্কা প্রথমে লাফিয়ে উঠেও বল রাখতে পারেননি আয়ত্তে। পরে তিনি ঝাঁপিয়ে গোললাইন থেকে থামিয়ে দেন বল। সেই মুহূর্তে গোল উদযাপনে মেতে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু রেফারি বাঁশি বাজায়, গোল হয়নি। হতাশ মেলে!
ম্যাচের ২৪ মিনিটে লিড নিতে পারতেন মারিয়ারা। গোলপোস্টে বল লাগায় এবারও আক্ষেপে ভাসতে হয় লাল-সবুজদের। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাড়ানো বল অতিথি গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে পারলেও শেষে হতাশ করে তহুরা-মারিয়াদের।
প্রথমার্ধে যোজন এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করেছিল। দুবারই ব্যর্থ হতে হয় জাল খুঁজে নিতে না পেরে। বিরতির পর নতুন উদ্যমে নামে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ৬৩ মিনিটে দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিল ভারত। দলটির উইঙ্গার প্রিয়াঙ্কার বাড়ানো বলে লিন্ডাকম্ব হেডও করেছিলেন। লক্ষ্যে থাকা বল লাফিয়ে গ্লাভসবন্দি করে সে যাত্রায় রক্ষা করেন গোলরক্ষক রুপনা চাকমা।
পরে ৭৫ মিনিটে আরেকবার বল জালে জড়ায় বাংলাদেশ। এবারও হতাশ থাকতে হয় মারিয়াদের। গোল হওয়ার আগমুহূর্তে ডি-বক্সের বাইরে ফাউলের শিকার হন তহুরা। বল ভারতের জালে জড়ানোর আগেই বাঁশি বাজান রেফারি। তাতে গোল হলেও বাতিলের হতাশাই সঙ্গী হয়।
সুযোগ হাতছাড়া আর দুর্ভাগ্য-আক্ষেপের দিনে শিরোপা নির্ধারণী গোলটি এনে দেন আনাই মোগিনি। শাহেদা আক্তার রীপার ব্যাকহিল থেকে আসা বলে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দূরপাল্লার শটে গোল আনেন আনাই। বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে তার দুর্দান্ত ক্রস লাফিয়ে উঠেও ঠেকাতে পারেননি ভারত গোলরক্ষক। আনাই গোল করলে উল্লাসে ফেটে পড়ে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা।
ম্যাচের ৮০ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার পরও বেশ ক’বার আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে উঠেছিল দুদল। শেষ পর্যন্ত আর কোনো দলই পায়নি জালের দেখা।
এর আগে, লিগপর্বের প্রথম ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেন মারিয়ারা। হোঁচটের পর ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগেনি। ভুটানকে ৬ গোলে উড়িয়ে শক্তির জানান দেয় স্বাগতিকরা। পরে শক্তিশালী ভারতকে একমাত্র গোলে হারিয়ে ফাইনালের পথ মসৃণ করে।
শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র করলেই চলত। মারিয়া মান্ডাদের গোলক্ষুধার সামনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। ১২ গোলের মালা পরিয়ে ফাইনালে চলে যায় বাংলাদেশ।